কাদের মোল্লার কবরে ‘শহীদ’ ফলকের খবর জানে না মন্ত্রণালয়

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আব্দুল কাদের মোল্লার কবরের নামফলকে ‘শহীদ’ শব্দটি লেখা থাকার খবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানে না।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2015, 02:56 PM
Updated : 3 Sept 2015, 02:56 PM

বৃহস্পতিবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, “বিষয়টি মন্ত্রণালয় অবগত নয়। আপনার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীর ‍যুদ্ধাপরাধীর কবরে শহীদ নামফলক লেখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রীকে প্রশ্নটি করেছিলেন।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে ‘মিরপুরের কসাই’খ্যাত কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

ওই রাতেই তার মরদেহ দাফন করা হয় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে।

এলাকাবাসী জানান, দাফনের কিছুদিনের মধ্যেই কবরটি সাদা টাইলসে ঘিরে দিয়ে ‘শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা’ লেখা নামফলক লাগানো হয়।

কাদের মোল্লার বাড়ি যাওয়ার জন্য আরজ খাঁর তিন রাস্তার মোড়ে একটি টিনের বেড়ায়ও পথ নির্দেশনা দেওয়া সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়, যাতে লেখা  ছিল ‘শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার কবর এই দিকে’। শেষ পর্যন্ত গত ২০ এপ্রিল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তার মোড়ে ঝোলানো সাইনবোর্ডটি খুলে ফেলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগের পর গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে কবর থেকে নামফলক সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু এখনও সে আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন তারা।  

ফরিদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ বলেন, যারা কাদের মোল্লার কবরে ‘শহীদ’ নামফলক ব্যবহার করেছেন, তাদেরও রাষ্ট্রদ্রোহী হিসাবে বিচার হওয়া উচিত।

মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান ফরিদ বলেন, “এক কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কবরের নামফলকে ‘শহীদ’ লেখা যায় না। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জার।”

গত মে মাসে কাদের মোল্লার ছোট ভাই ও ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাইনুদ্দিন মোল্লা বলেন, “কবরের ফলক জামায়াতের পক্ষ থেকে লাগানো হয়েছে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সেটা লাগানো হয়নি।

অন্যদিকে ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমির আবদুল তাওয়াব জানিয়েছেন, জেলা জামায়াতের সিদ্ধান্তে নয়, দলের স্থানীয় নেতাদের পরামর্শেই নামফলক লাগানো হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয়দের ক্ষোভ প্রকাশ এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।