মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ: নবজাতকের কাছে যাচ্ছেন মা

মাগুরায় যুবলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভূমিষ্ঠ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সন্তানের কাছে পাঠানো হয়েছে তার মাকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকমাগুরা প্রতিনিধি ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2015, 11:46 AM
Updated : 30 July 2015, 11:48 AM

মাগুরার পুলিশ সুপার এ কে এম এহসান উল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে নাজমা বেগমকে মাগুরা থেকে জেলা পুলিশের তত্ত্ববধানে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

মাগুরা সদর হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক অপূর্ব কুমার বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমানে নাজমা বেগম অনেকটা সুস্থ্য ও আশঙ্কামুক্ত। তার অপারেশনের শেলাই কাটা হয়েছে। তবে আগে থেকেই হাঁপানী (অ্যাজমা) থাকায় এখন তার শ্বাসকষ্ট আছে।

“হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে ঢাকায় তার অসুস্থ নবজাতক মায়ের বুকের দুধ খেতে পারে।”

পাশাপাশি তিনিও আরও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন বলে জানান ডা. অপূর্ব।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় এলাকায় গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) যুবলীগকর্মী কামরুল ভূইয়ার সঙ্গে সাবেক যুবলীগকর্মী মহম্মদ আলী ও আজিবরের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়।

ওই সময় গুলিতে কামরুলের বড় ভাই বাচ্চু ভুইয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাজমা  (৩০), প্রতিবেশী মিরাজ হোসেন আহত এবং তার চাচা আব্দুল মোমিন নিহত হন।

ওই রাতেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাজমার গুলিবিদ্ধ শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। আরও দুদিন পর রোববার তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।

মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতকটির চিকিৎসায় গত ২৮ জুলাই নয় সদস্যের ‘মেডিকেল বোর্ড’ গঠন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নবজাতক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবীদ হোসেন মোল্লাকে এই বোর্ডের প্রধান করা হয়েছে।

শিশুটিকে বর্তমানে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সেন্টু চন্দ্র দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

এদিকে, হতাহতের ওই ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিক্ষোভ-সমাবেশ-মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেলা পরিষদের সামনে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কে ওই ঘটনার মামলার আসামি যুবলীগকর্মী আজিবর, মোহাম্মদ আলী ও ছাত্রলীগ নেতা সেন সুমনকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে এলাকাবাসীর পক্ষে মোশারফ হোসেন ভূইয়া

বলেন, হতাহতের ঘটনায় পুলিশ ৭২ ঘণ্টা সময় নিলেও সাতদিন পরও মামলার প্রধান আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এলাকাবাসী আগামীতে বড় ধরনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

গুলিবিদ্ধ নাজমার স্বামী বাচ্চু ভূইয়ার অভিযোগ, তিনি পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আসামিরা তাকে ফোনে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলশের ওসি ইমাউল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার প্রধান আসামিদের এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

“তবে, সুমন নামে আরেক আসামিসহ দুজনকে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সাত দিনের রিমান্ডে চাওয়া হয়েছে।”

আগামী ৩ অগাস্ট সোমবার রিমান্ড শুনানি হবে বলে জানান তিনি।

এছাড়া বাচ্চুসহ বাদীপক্ষের সবার নিরাপত্তায় এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারাসহ একাধিক টহলদল কাজ করছে বলেও ওসি জানান।