প্যারিসে হামলার লক্ষ্য ছিলেন সৌদি যুবরাজ

প্যারিসের অবকাশ কেন্দ্র থেকে ফেরার পথে সৌদি গাড়িবহরে বন্দুকধারীদের হামলার লক্ষ্য সৌদি যুবরাজই ছিলেন বলে আলামত পাওয়ার কথা জানিয়েছে ফ্রান্সের পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2014, 05:42 PM
Updated : 21 August 2014, 05:42 PM

পুলিশ যুবরাজের নাম প্রকাশ করতে রাজি না হলেও ফ্রান্সের গণমাধ্যম বলছে, তিনি ছিলেন প্রয়াত সৌদি বাদশা ফাহাদের কনিষ্ঠ ছেলে আব্দুল আজিজ।

‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের ব্যয়বহুল ফোর সিজন হোটেল জর্জ-ফাইভে ৪৫ দিন অবকাশ শেষে ফেরার পথে বন্দুকধারীদের হামলার শিকার হন যুবরাজ।

ইউরোপের পর্যটন এলাকাগুলোতে দুই মাসেরও বেশি সময় অবস্থান শেষে ৫০ জন দেহরক্ষী ও গাড়ি বহর নিয়ে লে বুগজে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।

পথে আটজন বন্দুকধারী গাড়ি বহরে ঘিরে ধরে। আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে বহরের সামনের দিকে থাকা মার্সিডিজ ব্রান্ডের একটি মিলিব্যান্ড গাড়ি সড়কের একপাশে নিয়ে যায় ডাকাতরা।

ফ্রান্সের ‘লা মন্ডে’ পত্রিকার খবর বলা হয়, গত রোববার হামলার সময় যুবরাজ তার নিজের গাড়িতে নিরাপদেই ছিলেন। ডাকাতরা যে গাড়িটি টার্গেট করেছিল সেখানে একজন সৌদি গাড়িচালক, একজন দেহরক্ষী, নগদ তিন লাখ ৩৫ হাজার ডলার ও ফ্রান্সে সৌদি দূতাবাসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল।

অবশ্য ওই ঘটনায় কোনো গোপনীয় কাগজপত্র খোয়া যায়নি বলে বলে সৌদি দূতাবাস জানিয়েছে।

ওই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে ফ্রান্সের সুনাম সংকটের মধ্যে পড়েছে। সৌদি যুবরাজদের ব্যায়বহুল জীবনযাপন ও প্রমোদ ভ্রমণের বিষয়টিও এসেছে আলোচনায়।

আড়ম্বরপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য আগে থেকেই বেশ আলোচিত যুবরাজ আব্দুল আজিজ। রাজধানী রিয়াদের কাছে স্পেনের আল হামরা প্রসাদের মতো একটি স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগও রয়েছে তার।

প্রিন্স আব্দুল আজিজ প্রায়ই ইউরোপসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পর্যটন এলাকায় ভ্রমণ করেন। ৫০ জন দেহরক্ষী ও সেবক থাকে তার সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের কয়েকটি স্থানে তার কয়েকটি আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে বলে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে।

প্যারিসের পুলিশের ভাষ্য, ওই ঘটনা ছিল তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। যুবরাজের বিশাল বহরের কেউ না কেউ এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।

সৌদি রাজতন্ত্রের আরেকজন বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি বেসবোয়াস বলেন, সৌদি যুবরাজরা টাকাভর্তি স্যুটকেস নিয়েই ভ্রমণে বের হন। বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য কিনতে ও সেবাদাসদের মাইনে দিতে এসব নগদ অর্থ কাজে লাগান তারা। যেসব বিলাশী কাজে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যায় না, সেখানেও নগদ অর্থ কাজে লাগান যুবরাজরা।

স্পেনের ইবিসা দ্বীপে একটি রেস্টুরেন্টে ৮০ হাজার ইউরো টিপস দেয়ার অভিজ্ঞাতাও এই যুবরাজের রয়েছে বলে স্পেনিশ সংবাদপত্র এল মুন্ডর প্রতিবেদনে বলা হয়।