কংগ্রেসের জন্য লড়তে মাঠে প্রিয়াঙ্কা

ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগে থেকেই গণমাধ্যমগুলোর জরিপের ফলাফলে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়া ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের দিকে জনদৃষ্টি ফেরাতে এবার মাঠে নেমেছেন সোনিয়া তনয়া প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

>>রয়টার্স
Published : 16 April 2014, 01:52 PM
Updated : 16 April 2014, 02:44 PM

মঙ্গলবার আমেথিতে বড় ভাই রাহুলের নির্বাচনী জনসভায় প্রতিপক্ষকে তীক্ষ্ণ বাক্যবানে জর্জরিত করে প্রিয়াঙ্কা মূলত রাজনীতিতে কংগ্রেসের নতুন স্তম্ভ হিসেবে অবির্ভূত হয়েছেন।

পাশের আরেকটি আসনে প্রতিপক্ষ বিজেপি’র টিকেটে নির্বাচনে নামা চাচাতো ভাই বরুণকে লক্ষ্য করে দেয়া বক্তব্যে নিজ দলের আদর্শিক দিক তুলে ধরেন তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতে সক্রিয় বড় ভাই রাহুলের চেয়ে প্রিয়াঙ্কা তুলনামূলকভাবে ‘ন্যাচারাল পলিটিসিয়ান’ বা সাবলিল রাজনীতিবিদ বলেও মত দিয়েছেন অনেক বিশ্লেষক ও কংগ্রেসের শুভাকাঙ্খীরা। তার রাজনৈতিক সক্রিয়তা জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে পড়া কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে ভূমিকা রাখবে বলেও আশা তাদের।

গান্ধী পরিবারের সদস্য, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর চাচাতো ভাই বরুণ গান্ধী নির্বাচন করছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) টিকেটে। মঙ্গলবারের বক্তব্যে বেশ লম্বা সময় ধরে বরুণ প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রিয়াঙ্কা।

সমাবেশে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিজেপি’র হয়ে নির্বাচন করায় তিনি বরুণকেও ক্ষমা করবেন না।

“এটি কোনো পারিবারিক চা চক্র নয়; এটা হচ্ছে মতাদর্শগত দ্বন্দ্ব। আমার ছেলেও যদি এ ধরনের (মতাদর্শ বিরোধী) কিছু করে থাকে তাকেও ক্ষমা করব না।” আমেথির সমাবেশে একথা বলেন প্রিয়াঙ্কা, যার পাশের আসন থেকেই প্রতিদ্বনন্দ্বিতা করছেন বরুণ।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর ছেলে বরুণ। ১৯৮০ সালে এক বিমান দুর্ঘটনায় বরুণের বাবা সঞ্জয় মারা যান।

রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার বড় ছেলে রাজীব গান্ধীর সন্তান। রাজীব গান্ধী নিজেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন যিনি ১৯৯১ সালে আততায়ীদের গুলিত নিহত হন। সঞ্জয় গান্ধীর মৃত্যুর পর ররুণের মা গান্ধী পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যান। কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি।

জরিপে এগিয়ে থাকা বিজেপি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার গঠন করলে ভারতের রাষ্ট্রীয় আদর্শ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে প্রচার করে আসছে ক্ষমতাসীনরা। দলের সেই প্রচারাভিযানের সূত্র ধরে প্রিয়াঙ্কা বালেন, “এবারের নির্বাচন হচ্ছে ভারতের অস্তিত্ব (হার্ট অব ইন্ডিয়া) রক্ষার লড়াই।”
অবশ্য প্রিয়াঙ্কার বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন বরুণ। টিভি সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, “প্রিয়াঙ্কা সীমালঙ্ঘন করছেন।”

তবে কংগ্রেস নেতাদের মন্তব্য হচ্ছে, ১২৯ বছরের পুরোনো দল কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ ধরে রাখতে প্রিয়াঙ্কা বড় ধরনের ভূমিকা রাখছেন।

কংগ্রেসের সভানেত্রী মেয়ে হলেও প্রিয়াঙ্কা কেবল তার মা সোনিয়া গান্ধী ও ভাই রাহুল গান্ধীর পক্ষে নির্বাচনী সভা সমাবেশ করবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

“এনিয়ে গণমাধ্যমে অনেক কিছু বলার চেষ্টা করছে। তবে তিনি (প্রিয়াঙ্কা) একাধিকবার বলেছেন, তার ভূমিকা কেবল ওই দুই রাজ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। তার সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান জানাই,” বলেন কংগ্রেস মুখপাত্র শাকিল আহমেদ।

সোনিয়া গান্ধীর জীবনবৃত্তান্তের ওপর প্রকাশিত বইয়ের লেখক রাশেদ কিদবি বলেন, প্রিয়াঙ্কা দলের জন্য আগের চেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছেন। রাহুলের নির্বাচনী প্রচারণায় পূর্ণ সহায়তাও করছেন।