ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শেষ শক্ত ঘাঁটি মসুল পুনরুদ্ধারের অভিযানের পথে জঙ্গিদের পাতা বিস্ফোরক ও ফাঁদের কারণে ইরাকি বাহিনীর গতি মন্থর হয়ে পড়েছে।
Published : 19 Oct 2016, 02:22 PM
তারপরও বুধবার অভিযানের তৃতীয় দিনে ইরাকি বাহিনীর অগ্রগতি অব্যাহত ছিল বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
ইরাকি কমান্ডাররা জানিয়েছেন, প্রধান দুটি লড়াই ক্ষেত্র দিয়ে মসুলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে অভিযানরত ইরাকি বাহিনী।
যুদ্ধক্ষেত্রের নিকটবর্তী খাজির থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দুপক্ষের লড়াই চলছে এবং উভয় পক্ষ থেকে তীব্র গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।
কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী মুসলের প্রান্ত থেকে এখনও ২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তারা মসুলের পথে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি গ্রাম দখল করে নিয়েছে।
ইরাকি সেনাবাহিনী ও পেশমেরগা বাহিনীর কমান্ডাররা জানিয়েছেন, আইএস যোদ্ধাদের প্রতিরোধ সত্বেও পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান অব্যাহত আছে।
আইএসের যোদ্ধারা আত্মঘাতী গাড়িবোমার বিস্ফোরণে পাল্টা হামলা চালিয়ে অভিযানের গতি ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
এরপরও বেশ কয়েকটি গ্রাম মুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরাকি বাহিনীর অভিজাত ‘সন্ত্রাস বিরোধী’ বিভাগের মুখপাত্র সাবাহ আল নুমান।
“ইরাকি বাহিনী তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং দারুণ সাফল্য পাচ্ছে, কিন্তু তারা পরিকল্পনানুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং তাড়াহুড়া করছে না,” বলেন তিনি।
মুসল ও এর আশপাশে আইএসের তিন থেকে সাড়ে চার হাজার যোদ্ধা রয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। অপরদিকে মসুল অভিযানে রত ইরাকি বাহিনীতে ইরাকি সেনাবাহিনী, কুর্দি পেশমেরগা ও স্থানীয় সুন্নি নৃগোষ্ঠীগুলোর যোদ্ধা মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে।
খাজির থেকে আল জাজিরায় অপর এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ইরাকি বাহিনীর অভিযানের গতি আগের দিনেরও মতো দুর্দান্ত ছিল না।
মসুলের পথে হামদানিয়ায় আইএসে যোদ্ধারা অবস্থান নিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন পেশমেরগার কর্নেল খলিল মিরো।
“হামদানিয়ায় প্রবেশ করছি না আমরা। এজন্য ইরাকি সেনাবাহিনীর সহযোগীতা দরকার। আমরা এই এলাকায় অপেক্ষা করবো,” বলেন তিনি।
সোমবার যে এলাকাগুলো ইরাকি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে মঙ্গলবার অধিকাংশ সময় সেসব এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে ব্যয় করেছে তারা।
পেমমেরগা বাহিনী আইএসের পেতে রাখা বিস্ফোরক এড়াতে প্রধান সড়ক ছেড়ে এবড়ো-খেবড়ো পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে।
মিরো বলেন, “পথে যেসব গ্রাম পড়বে, আইএস সেগুলো ছেড়ে গেলেও, সেগুলোতে প্রবেশ করতে কিছুটা সময় লাগবে। কারণ এগুলো পরিষ্কার করতে হবে।
“দুই বছরের বেশি সময় ধরে তারা এখানে ছিল। বিস্ফোরক দিয়ে ফাঁদ পাতার মতো যথেষ্ট সময় পেয়েছে তারা।”
লড়াইয়ের কারণে মসুলের ১৫ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশ পালিয়ে যেতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে জাতিসংঘ। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মসুলের বেসামরিক বাসিন্দারা জানিয়েছেন আইএসের যোদ্ধারা তাদের শহর ছেড়ে যেতে বাধা দিয়ে তাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।