যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগ বিশ্ব প্রবৃদ্ধিতে হুমকি: জি-৭

জাপানে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ সম্মেলনের ঘোষণায় নেতারা বলেছেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ ) থেকে বেরিয়ে গেলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2016, 01:38 PM
Updated : 27 May 2016, 02:18 PM

বৃহস্পতিবার জাপানে  জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয় বলে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ঘোষণায় বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিয়ে অর্থনীতি ও নিরাপত্তা সংকট মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করা হয়।

বুধবার সকালে জাপানের ইসেশিমায় শিল্পোন্নত সাতটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স ও জাপানের শীর্ষ নেতারা জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সম্মেলন শেষ হয়। এরপরই আসে আনু্ষ্ঠানিক ঘোষণা। ঘোষণায় যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগ বা ‘ব্রেক্সিট’ এর বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় ‘ব্রেক্সিট’ নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়, এর ফলে বিশ্বের বাড়তে থাকা প্রবৃদ্ধির ধারা উল্টোদিকে প্রবাহিত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্ববাণিজ্য, বিনিয়োগ ও চাকরির বাজার।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে আগামী ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে গণভোট হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২৮ দেশের ইইউ-তে থাকার পক্ষে প্রচারণাও চালাচ্ছেন।

সাম্প্রতিক জরিপে ইইউপন্থিরা সামান্য এগিয়ে আছে বলে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শীর্ষ সম্মেলনের আগে গেল সপ্তাহে জি-সেভেন দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকেও ‘ব্রেক্সিট’ নিয়ে একই সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছিল।

জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হারুহিকো কুরোদা বিবিসি’কে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের গণভোট নিয়ে জি-৭ অর্থমন্ত্রীরা উদ্বিগ্ন।

এরই ধারাবাহিকতায় শীর্ষ সম্মেলনে বলা হয়, যুক্তরাজ্য ইউরোপ থেকে বেরিয়ে গেলে তা বাণিজ্য ও চাকরির বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

একইসঙ্গে এ ঘটনা বিনিয়োগকারীদের ‘দ্বিধাগ্রস্ত’ করবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন সাত দেশের নেতারা, যা অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

দুইদিনের এ শীর্ষ সম্মেলনে শিল্পোন্নত দেশগুলোর নেতারা বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিকে ‘জরুরি অগ্রাধিকার’ হিসাবে বিবেচনা করে এর জন্য হুমকিস্বরূপ সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদী হামলা মোকাবেলায় একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।

তারা একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের নেওয়া ‘সংরক্ষণবাদ’ ও প্রতিযোগিতামূলকভাবে মুদ্রার অবমূল্যায়ন পরিহার করে আন্তর্জাতিক বাজার সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ারও আহ্বান জানান।

জি-সেভেন সম্মেলনে ইউরোপে শরণার্থী সংকট নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরে শীর্ষ নেতাদের যৌথ ঘোষণায় একে ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে উল্লেখ করে তা মোকাবেলায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দাতা দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ঘোষণায় ‘উদ্বেগ’ জানানো হলেও সেখানে চীনের ভূমিকা নিয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি।

ঘোষণায় বিরোধপূর্ণ ওই অঞ্চলের দেশগুলোকে অন্য দেশের নৌ-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করতে এবং শান্তিপূর্ণভাবে আইন মেনে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।