২০১০ সালে ফিফার নির্বাহী কমিটির ভোটে কাতার ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দেশটির অত্যধিক তাপমাত্রা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বছরের কোন সময় টুর্নামেন্টটি হওয়া উচিত- তা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা, উঠে আসে নানা বিকল্প।
উত্তর গোলার্ধে শীতকালে বিশ্বকাপ আয়োজন করলে ইউরোপীয় লিগগুলোর সমস্যা হয় বলে সাধারণত গ্রীষ্মেই বিশ্বকাপ হয়। তবে গ্রীষ্মে কাতারের তাপমাত্রা অত্যধিক থাকে বলে সে সময় বিশ্বকাপ আয়োজনে আপত্তি জানায় অনেক দেশ।
পরে ২০১৩ সালের অক্টোবরে একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই করে শেখ সালমান বিন ইব্রাহিম আল-খলিফার নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্স গ্রীষ্মের পরিবর্তে শীতে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য সুপারিশ করে।
গ্রীষ্মে কাতারে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। আর নভেম্বর-ডিসেম্বরে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নামে। তাই এই সময়ে বিশ্বকাপ আয়োজনে টাস্ক ফোর্সের এই সুপারিশ আগামী ১৯-২০ মার্চে জুরিখে হতে যাওয়া ফিফার নির্বাহী সভায় পাশ হয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
টাস্ক ফোর্স প্রধান ২০২২ সালের বিশ্বকাপের সময় প্রয়োজনে কিছুদিন কমিয়ে আনারও সুপারিশ করেন। ফিফা অবশ্য ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, ৩২ দলের ৬৪ ম্যাচের টুর্নামেন্টের আকার ছোট করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
অনেকেই ধারণা করছে, কাতার বিশ্বকাপ ২৬ নভেম্বর শুরু হয়ে ২৩ ডিসেম্বর শেষ হবে।
কাতার বিশ্বকাপের জন্য বিকল্প সময় হিসেবে মে মাস কিংবা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিও আলোচনায় ছিল। তবে ওই দুই বিকল্প বাদ দিয়ে নভেম্বর-ডিসেম্বরকে বেছে নেয়ার কারণ মঙ্গলবার দেওয়া বিবৃতিতে জানিয়েছে ফিফা।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে শীতকালীন অলিম্পিকের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক হতো।
আর কাতারে মে মাসেও অনেক তামপাত্রা থাকে বলে সে সময়টাও বিবেচনা করা হয়নি।
বিবৃতিতে সব বিকল্প সময়েরই নানা ‘সুবিধা ও অসুবিধা’ ছিল বলে জানান ফিফা মহাসচিব জেরোমে ভালকে। সেই সঙ্গে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসকেই ‘একমাত্র সমাধান’ বলেন তিনি।
এর আগে কাতার বিশ্বকাপ গ্রীষ্মে হলে খেলোয়াড়েরা টুর্নামেন্টটি বর্জন করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন ফুটবলারদের বৈশ্বিক সংগঠন ফিফপ্রোর প্রধান। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ হলে সংস্থাটির নিশ্চয় কোনো আপত্তি থাকবে না।
অন্যদিকে, ইউরোপের বড় ক্লাবগুলো মে মাসে বিশ্বকাপ চায়। কারণ শীতকালীন টুর্নামেন্ট তাদের ঘরোয়া লিগগুলোয় বিঘ্ন ঘটায়। তাই কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে নতুন এই সিদ্ধান্ত হলে তাতে ওই লিগগুলোর ঘোর আপত্তি উঠতে পারে।