নাটকীয় লড়াইয়ে আর্সেনালের আরেকটি হার

মূল গোলরক্ষক পিয়েতর চেকের অনুপস্থিতিতে পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না দাভিদ অসপিনা। উল্টো বড় এক ভুল করে বসলেন, রক্ষণভাগও দৃঢ়তার পরিচয় দিতে পারেনি। তারপরও আক্রমণভাগের সাফল্যে দুইবার সমতায় ফেরে আর্সেনাল। কিন্তু তাতে হয়নি শেষরক্ষা; নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে অলিম্পিয়াকোসের কাছে ৩-২ গোলে হেরে গেছে আর্সেন ভেঙ্গারের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2015, 09:20 PM
Updated : 29 Sept 2015, 09:20 PM

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মঙ্গলবার রাতের ‘এফ’ গ্রুপের এই ম্যাচে অলিম্পিয়াকোসের দুই গোলদাতা হলেন ফেলিপে পার্দো ও আলফ্রেড ফিনবোগাসন, অন্যটি আত্মঘাতী। আর্সেনালের দুই গোলদাতা থিও ওয়ালকট ও আলেক্সিস সানচেস।

দিনামো জাগরেবের বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করা আর্সেনাল এদিন প্রথম মিনিট থেকেই ছিল সতর্ক। নিজেদের রক্ষণ সামলে আক্রমণে উঠছিল তারা।

মাঝমাঠ থেকে গুছিয়ে আক্রমণে উঠতে থাকা দলটি দশম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায়। প্রতি আক্রমণে আলেক্সিস সানচেসের লম্বা পাস ধরে অ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলেইন ডি বক্সে ঢুকে পড়লেও তার শটটি অবশ্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

অলিম্পিয়াকোস মাঝে মধ্যে আক্রমণে উঠলেও স্বাগতিকদের রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না তারা।

এরপর কিছু সময়ের জন্য লড়াইটা মাঝমাঠ কেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। খেলা হয়ে পড়ে ধীর। আর এরই মাঝে ৩৩তম মিনিটে কিছুটা ভাগ্যের জোরেই এগিয়ে যায় অলিম্পিয়াকোস।

কর্নারে গ্রিক মিডফিল্ডার কন্সট্যানটিনোস ফরটৌনিসের নেওয়া ক্রসে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন পার্দো। কলম্বিয়ার স্ট্রাইকারের শটটি আর্সেনাল স্ট্রাইকার চেম্বারলেইনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়।

অলিম্পিয়াকোসের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অবশ্য বেশিক্ষণ থাকেনি। দুই মিনিট বাদেই আলেক্সিস সানচেস ও থিও ওয়ালকটের দারুণ বোঝাপড়ায় সমতায় ফেরে আর্সেনাল।

সানচেস বাঁদিক দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে ডি বক্সে ঢুকে পড়া ওয়ালকটকে পাস দেন। তা থেকেই গোলরক্ষককেই পরাস্ত করেন ইংলিশ এই স্ট্রাইকার।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আট ম্যাচ পর গোল পেলেন ওয়ালকট, সময়ের হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর পর। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে পার্তিজান বেলগ্রেডের বিপক্ষে আগের গোলটি করেছিলেন তিনি।

পাঁচ মিনিট বাদে ম্যাচে আবারও নাটকীয়তা, আর্সেনাল গোলরক্ষকের চরম ভুলে ফের এগিয়ে যায় অতিথিরা। বাঁ দিক থেকে ফরটৌনিসের নেওয়া বাঁকানো কর্নার গোলরক্ষক অসপিনা গোলমুখে লাফিয়ে উঠে ধরে ফেললেও বুঝতে পারেননি, যে বল নিয়ে ভিতরে ঢুকে যাচ্ছেন তিনি। তাই হাত থেকে বল ফেলে দেন, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। রেফারি গোলের বাঁশি বাজান।  

পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নামা আর্সেনাল গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। অবশেষে ৬৫তম মিনিটে কাঙ্খিত গোলের দেখা মেলে।

দ্বিতীয়বারের মতো আর্সেনালকে সমতায় ফেরানো গোলটিও ছিল ওয়ালকট-সানচেসের নৈপুণ্যে। ওয়ালকটের ক্রসে হেড করেই বল জালে জড়ান গত শনিবার লিগে হ্যাটট্রিক করা সানচেস।

আর্সেনালের সমতায় ফেরার স্বস্তি অবশ্য এক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। বদলি নামা আইসল্যান্ডের স্ট্রাইকার ফিনবোগাসনের ছোট ডি বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া আলতো শটে তৃতীয়বারের মতো এগিয়ে যায় অলিম্পিয়াকোস।

বাকি সময়ে সমতায় ফেরার সুযোগ বেশ কবার পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি আর্সেনাল। শেষ পাঁচ মিনিটেই দারুণ দুটি সুযোগ পায় তারা, কিন্তু প্রথমবার চেম্বারলেইন, দ্বিতীয়বার ওয়ালকট তা নষ্ট করলে ইউরোপ সেরার মঞ্চে টানা দ্বিতীয় হারের হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয় লন্ডনের ক্লাবটিকে।

আর ১২ বারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে অলিম্পিয়াকোস।   

টানা দ্বিতীয় হারে শূন্য পয়েন্ট নিয়ে 'এফ' গ্রুপের তলানিতে আছে আর্সেনাল।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে দিনামো জাগরেবকে ৫-০ গোলে হারানো বায়ার্ন ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে।

যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা অলিম্পিয়াকোস ও জাগেরেবের পয়েন্ট সমান ৩।