কিশোরগঞ্জের সোয়ইজনী নদীতে নৌকাবাইচ

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা নিকলীতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বওয়ার প্রতিযোগিতা নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2017, 07:36 AM
Updated : 21 Sept 2017, 07:36 AM

নিকলী নতুন বাজার সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটি ও বণিক সমিতির যৌথ আয়োজনে উপজেলা সদরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন সোয়ইজনী নদীতে বুধবার বিকালে ১০টি দলের অংশগ্রহণে এ প্রতিযোগিতা হয়।

নৌকাবাইচ দেখতে সকাল থেকেই বিভিন্ন বয়সী হাজার হাজার দর্শক ঘটনাস্থলে হাজির হতে থাকেন। বিকালের আগেই বেড়িবাঁধের পাঁচ কিলোমিটার মুখর হয়ে ওঠে বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারনায়।  

নিকলী ছাড়াও জেলার হাওর অধ্যুষিত অন্যান্য উপজেলাসহ পাশের নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ জেলার লোকজন ভিড় জমান নৌকাবাইচ দেখতে। অনেকে নৌকায় চড়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।

বিকালে মাঝিমাল্লারা বাহারি পোশাক পড়ে নৌকা বাইতে শুরু করেন; এ সময় সারি গান গেয়ে ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে দর্শকেরা তাদের উৎসাহ দেন। গান আর বাদ্যের তালে তালে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।

নৌকাবাইচ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক উপজেলার সদর ইনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান কারার শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপ বলেন, নিকলীর এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। এই একটি দিনের জন্য হাওরবাসী সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন।

“প্রতিবছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বোরো ধান কাটা শেষ হলেই বাইচের জন্য পুরোনো নৌকা মেরামত ও নতুন নৌকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়।”

আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন,কালের বির্বতনে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক খেলাধুলার মতো নৌকাবাইচও হাওরবাসীর স্মৃতি থেকে মুছে যেতে বসেছিল।

গত আট বছর ধরে নিকলী উপজেলা প্রশাসন হাওরে হারানো এই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আশ্বিন মাসের কোনো এক দিন নৌকাবাইচের আয়োজন করে আসছে।  

এবার উপজেলা প্রশাসন এখন উদ্যোগ না নেওয়ায় নিকলী নতুন বাজার সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটি ও বণিক সমিতি এই নৌকা বাইচের আয়োজন করে বলে জানান তিনি।

প্রতিযোগিতায় নিকলী গোবিন্দপুরের আলী হোসেনের দল প্রথম, নিকলীর কারার শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপের দল দ্বিতীয় ও গুরুই গ্রামের তোতা মিয়ার দল তৃতীয় হয়।

পুরষ্কার হিসেবে প্রথম বিজয়ী দলকে ফ্রিজ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ী দলকে একটি করে রঙিন টেলিভিশন দেওয়া হয়।

নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম, উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহানা নাসরীন,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসহাক ভুঞা, নিকলী থানার ওসি নাসির উদ্দিন ভূঁইয়াসহ অন্যান্যরা বিজয়ীদের পুরষ্কার হস্তান্তর করেন।