বাগমারায় সৈনিক লীগনেতার বিরুদ্ধে ১০ পরিবারের অভিযোগ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি এসএম এনামুল হকের বিরুদ্ধে পানের বরজসহ মুরগির খামার ধ্বংস করার পাশাপাশি কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2017, 06:46 AM
Updated : 1 August 2017, 06:46 AM

উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নের চকমহব্বতপুর গ্রামের ১০ পরিবার - আজিজুল হক, মোস্তাকিম, আয়েন উদ্দিন, আনোয়ার, ইউসুফ, ইব্রাহীম, জার্জিস হোসেন, শাহাবুল, আজাবুল ও দুলাল এই অভিযোগ করেন।

রাজশাহী শহরের কাজীরগঞ্জে সোমবার দুপুরে তারা সাংবাদিকদের কাছে ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেন; এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলছেন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু রাতের অন্ধকারে হামলা চালানো হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত আয়েন উদ্দিন বলেন, গত ২৩ জুলাই তার বাড়ির সীমানা প্রচীর নির্মাণের সময় প্রতিবেশী হাবিবুর রহমানের সঙ্গে বিরোধ বাধে।

“এ সময় বাগমারা উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি এসএম এনামুল হকের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে, বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসযোগ করে।”

ঘটনার পরদিন পুলিশ দেওয়া হলেও হামলা চালানো হয় বলে তার অভিযোগ।

ক্ষতিগ্রস্ত আজিজুল হক বলছেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদের পক্ষে। তাদের প্রতিপক্ষে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম এনামুল হক।

“নির্বাচনে উভয়পক্ষ পরাজিত হয়।এরপর থেকে এনামুল হক তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন।”

আজাবুল ইসলাম, সাহাবুল ইসলাম, জার্জিস আলম, মুস্তাকিন ও ইউসুফ আলীর অন্তত তিন বিঘা পানের বরজ কেটে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ।

তারা সাংবাদিকদের বলেন, “মোস্তাকিমের দুই হাজার মুরগির বাচ্চার একটি খামার ধ্বংস করেছে। আয়েনের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। আর মোস্তাকিম ও আজিজের বাড়িতে ভাংচুর চালিয়েছে।”

ঘটনার পর থেকে এই ১০ পরিবারের দুই-একজন বৃদ্ধ বাদে সবাই মোহনপুর, পবা, তানোর ও রাজশাহী শহরে আত্মীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে তারা সাংবাদিকদের জানান।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসএম এনামুল হক বলেন, “আমি বিবাদ মীমাংসার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এতে আমি নিজেও আহত হই। এরপর চিকিৎসাধীন রয়েছি।

“এখনও কে বা কারা হামলা চালাচ্ছে নাকি তারা নিজেরাই এমন ঘৃণিত কাজের সাথে জড়িত তা আমার জানা নেই।”

এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে শাহিনূর ও আমির আলী শেখ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন।

ওসি নাছিম বলেন, “দুটি মামলাই পুলিশ তদন্ত করছে। ক্ষতিগ্রস্ত ১০ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ দেওয়া হয়েছে।

“তবে রাতের অন্ধকারে প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে হামলা চালাচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।”