হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক জানান, সোমবার ভোর রাতে শহরের টাউনহল এলাকায় অবস্থিত ‘দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার’ পত্রিকা অফিস থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
বিকালে আদালতে হাজির করলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেয় বলে জানান ওসি।
মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা রফিক (৬৫) স্থানীয় ‘দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি বলেন, গত ৮ জুন দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচারে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকার বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগের ৮০ জন এমপি মনোনয়ন থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়, যাতে হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আব্দুল মজিদ খানের নামও রয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এমপি আব্দুল মজিদ খানের ভাতিজা ও পুকুড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আফরোজ মিয়া বাদী হয়ে ওই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক গোলাম মোস্তাফা রফিক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নীরঞ্জন সাহা নীরুর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন বলে জানান ওসি।
ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
হবিগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাজী কামাল উদ্দিন জানান, আদালত থেকে বিকালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি দাবি করে সেটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা।
এদিকে, তথ্য-প্রযুক্তি আইন থেকে ৫৭ ধারা বাদ দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে এ বিষয়ে ‘বিভ্রান্তি’ দূর করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মাসখানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠকের পর আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “৫৭ ধারার যে কনফিউশন ছিল সেগুলো ভেটিংয়ে দূর করা হবে এবং ৫৭ ধারার সমন্ধে যে বক্তব্য ছিল- যেটা মুক্ত বক্তব্য রাখার যে স্বাধীনতা সেটা ব্যাহত করছে ৫৭ ধারা, সেটা দূরীকরণ হবে।”
তিনি বলেন, “সরকার কোনোভাবেই ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন বন্ধ করবে না এবং করার কোনো ইচ্ছা, অভিপ্রায় নাই।”