বাবা-মায়ের কোলে চড়ে পরীক্ষা, সেই প্রতিবন্ধী উত্তীর্ণ 

পঙ্গুত্ব দমাতে পারেনি নাইছ খাতুন হাসিকে। জন্মথেকেই দুটি পা অকেজো হওয়ায় হাঁটতে পারেন না তিনি। ডান হাতেও শক্তি নেই। বাম হাতে ভর করে চলাফেরা করতে হয়।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2017, 06:16 PM
Updated : 4 May 2017, 06:18 PM

জেলার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের বহালগাছা গ্রামের দরিদ্র কৃষক নজরুল ইসলামের মেয়ে নাইছ খাতুন এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৬৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

উপজেলার বিশ্বহরিগাছা বহালগাছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি পরীক্ষায় অংশ নেন। বাড়ী থেকে সাত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাবার কোলে চড়ে ধুনট এনইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন তিনি।  

এভাবে বাবা-মায়ের কোলে চড়েই তিনি ২০১৪ সালে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৩.৬৭ পেয়েছিলেন বলে তার বাবা-মা জানান।

নাইছ খাতুনের মা আকতার জাহান গৃহীনী। বড় ভাই রবিউল করিম বগুড়া আজিজুল হক কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বাবা ছেলের খেলাপড়ার খরচ চলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন। এরপর শারীরিক প্রতিবন্ধী নাইছ খাতুনের লেখাপড়ার খরচও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

তার বাবা নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী নাইছ খাতুনের চিকিৎসার জন্য অনেক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব হয়নি। নাইছ সমাজের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। তাই সে লেখাপড়া করে শিক্ষক হতে চায়।

কিন্তু দুই ছেলে-মেয়ের লেখাপাড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। সরকারি সহযোগিতা পেলে তার প্রতিবন্ধী মেয়ের মনের আশা পূরণ হবে বলে মনে করেন তিনি।

নাইছ খাতুন বলেন, “ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। তাই মনে ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল নিয়েই শিক্ষা জীবন শুরু করেছি।”

বিশ্বহরিগাছা বহালগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেজাব উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নাইছ খাতুনের বাবা-মা তাকে কোলে করে ক্লাসে নিয়ে এসে বেঞ্চে বসিয়ে যেতেন। প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়া হতো।

একটু সহযোগিতা পেলে নাইছ অনেক ভাল ফলাফল অর্জন করতে পারবেন বলে মনে করেন তিনি।