এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে ‘প্রতারণা’

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে এক ব্যক্তির প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2017, 05:17 PM
Updated : 29 April 2017, 05:17 PM

বিষয়টি জানিয়ে প্রতারণার শিকার এক ব্যক্তি সিভিল মৌলভীবাজারের সার্জন ও জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

শাখাওয়াত হোসেন আক্কাস নামের ওই ব্যক্তি জুড়ী-ফুলতলা সড়কের কামিনিগঞ্জ বাজারে ডাক্তার পরিচয়ে চেম্বার দিয়ে রোগী দেখেন।

তার কাছে চিকিৎসা নিতে যাওয়া নোমান আহমদ নামের এক ব্যক্তি বিষয়টি জানার পর গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে কামিনীগঞ্জ বাজারে ফুলতলা রোডের ‘ডা.’ মো. শাখাওয়াত হোসেন আক্কাসের কাছে যান। তার বিশ্বাস ছিল আক্কাস এমবিবিএস ডাক্তার। পরে তার দেওয়া ব্যবস্থাপত্রেও ডা. মো. শাখাওয়াত হোসেন লেখা ছিল।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ওষুধ সেবন করার পাঁচ দিন পর নোমানের উপসর্গ কমার পরিবর্তে বেড়ে যায়। অসুস্থতা ও চিকিৎসার বিষয়টি বন্ধুদের জানালে তারা জানান সাখঅওয়াত এমবিবিএস ডাক্তার নন।

পরে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে আক্কাসের ব্যবস্থাপত্রে দেওয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৯১৮৫ খুঁজে দেখা যায় এ রেজিস্ট্রেশন নম্বর মো. মনসুর রহমান নামের এক ডাক্তারের, জানান নোমান।   

এরপর প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে নোমান ওই লোকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ইউএনও বরাবর আবেদন জানান।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর শাখাওয়াত হোসেন আক্কাসের দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে তার নামের শেষে ডি ফার্ম (ঢাকা), ভি এইচ এফ এ (চট্টগ্রাম) লেখা ছিল। আর ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তা এমবিবিএস (এএম) হয়ে যায়।

ইউএনওর কাছে দেওয়া অভিযোগের একটি অনুলিপি মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ও জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকেও দিয়েছেন নোমান।

এ ব্যাপারে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মহীউদ্দিন বলেন, “মেডিকেল শিক্ষায় ৭৩ দিনে এমবিবিএস ডাক্তার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

জুড়ীর ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) বর্ণালী পাল বলেন, নিজের বদলি সংক্রান্ত ব্যস্থতায় বিষয়টির তদন্ত করা যায়নি। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন সত্যকাম চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ লোক শতভাগ ভুয়া। তিনি কখনও ডাক্তার লিখতে পারেন না। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। এছাড়া ওই ব্যক্তিকে তার কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে।

তার শাস্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, শাস্তির বিষয়টি সরকারের। তবে বিএমডিসি চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।