তারা বলছেন, কুল পেকে এমনিতেই ঝরে পড়ছে; পচে যাচ্ছে বাগানেই।
উলাশির কাঠুরিয়া মাঠের খোরশেদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবার তিনি আট বিঘা জমিতে কুলচাষ করে চার লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছিলেন।
“কিন্তু চোখের সামনেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিছুই করতে পারছি না। সবার একই অবস্থা। সবাই কেবলই বুক চাপড়ে মরছি।”
কথা বলতে বলতে বারিপোতা গ্রামের চাষী দেলোয়ার হোসেনের চোখে পানি এসে পড়ে।
তিনি বলেন, “আবওহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ১০ কেজি করে কুল আসছে। সে হিসেবে এক বিঘার একটি বাগান থেকে ৪০ মণ কুল সংগ্রহ করা যায়। কিন্তু মাত্র কয়েক দিন বেচার পরই ধর্মঘট শুরু হয়ে গেল। এখন কেনার লোক নেই।”
বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, বাগানজুড়ে বাউকুল, আপেল কুল ও নারকেল কুল তারকাপুঞ্জের মতো ছেয়ে আছে। স্বল্প উচ্চতার গাছগুলো সইতে পারছে না কুলের ভার। অনেক জায়গায় নুইয়ে পড়েছে ডাল।
“মাটিতে পড়ে থেকে থেকে মিষ্টি কুলগুলো সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে তো বাগান সাফ করার খরচই যোগাড় করতে পারব না। আর ঘর-সংসার চলবে কিভাবে তারও কোনো ঠিক নেই।”
গোগা গ্রামের সহিদুল ইসলাম জানান, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিকেজি কুল তারা পাইকারি ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এ বছর দুই-তিন দিন বিক্রি করার পরই শুরু হয়ে যায় ধর্মঘট।
“গত রোববার ধর্মঘটের প্রথম দিন ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। পরদিন আরও কমে যায়। গত দুই দিনে কোনো ক্রেতাই পাওয়া যাচ্ছে না।”
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার জানিয়েছেন, এ উপজেলায় পাঁচ শতাধিক কুলচাষী প্রায় হাজার বিঘা জমিতে কুলচাষ করেছেন। তাদের মধ্যে শ্যামলাগাছির মনি বেগম, গাতিপাড়ার আহসান হাবিব, গোগার সহিদুল ইসলাম, গাতিপাড়ার সফিউদ্দিন, কাঠুরিয়ার আব্দুল জব্বার, জামতলার গোলাম আজম বড় খামারি।
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় জামির হোসেন নামে চুয়াডাঙ্গার এক বাসচালকের যাবজ্জীবন সাজা হওয়ায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় গত রোববার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।
এর মধ্যে ঢাকার সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে সোমবার ঢাকার আদালতে ট্রাকচালক মীর হোসেনের ফাঁসির রায় হলে রাতে পরিবহন শ্রমিক নেতারা সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচি দেন।