সাত খুনের রায় দ্রুত কার্যকর চায় নিহতদের পরিবার

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল‌্যকর সাত খুনের মামলায় ২৬ আসামির ফাঁসির রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আসামিপক্ষ; দোষীদের সাজা দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2017, 06:44 AM
Updated : 16 Jan 2017, 11:12 AM

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, “বহুদিন পর আমরা রায় পেয়েছি। আমরা সন্তুষ্ট। কিন্তু আমরা চাই, এই রায় দ্রুত কার্যকর হোক। হাই কোর্টে যাতে এই রায় বহাল থাকে।”

চন্দন সরকারের মেয়ে সুস্মিতা সরকারও রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও বলেন, আসামিদের সাজা দ্রুত কার্যকর হোক- এটাই তাদের চাওয়া।

“রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমার বাবা সারাজীবন ন্যায় বিচারের জন্য কাজ করেছেন। আজকে তার আত্মা শান্তি পাবে।”

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ ফেলে দেওয়া হয় শীতলক্ষ‌্যা নদীতে।

ওই ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা করেন। বিচার শেষে সোমবার একসঙ্গে দুই মামলার রায় ঘোষণা করেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন।

রায়ে নারায়ণগঞ্জের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও সাবেক তিন র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ২৬ আসামির ফাঁসির আদেশ হয়; বাকি নয় আসামিকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড।

রায়ের পর সেলিনা ইসলাম বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে যে অসহনীয় কষ্ট ও দুঃখের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, এই রায়ের পর সেই কষ্ট কিছুটা হলেও ভোলার চেষ্টা করতে পারব।”

তিনি বলেন, বিচারের ধারাবাহিকতায় নানা ধরনের চাপ ও বাধা তাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে।

“প্রচণ্ড চাপ ছিল। অনেক কাজে বাধা দেওয়া পেয়েছি। সর্বশেষ মাসখানেক আগেও চিঠিতে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আজ এসে রায়টা পেলাম।”

নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, তাদের মামলার এজাহারে আরও ছয়জনের নাম ছিল, যাদের পরে অভিযোগপত্রে রাখা হয়নি। ওই ছয়জন বিচারের আওতায় না আসায় তিনি ‘আংশিক খুশি’ হয়েছেন।

ওই ছয়জনকে বাদ দেওয়ায় নারাজি আবেদন করেছিলেন সেলিনা ইসলাম। তবে তা আদালতের সাড়া পায়নি।   

চন্দন সরকারের পরিবারের হয়ে এ মামলা লড়েন আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান, যিনি গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। 

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “এই রায়ে আমরা আনন্দিত। আমরা খুশি হয়েছি। ৩৫ জন আসামির মধ্যে সবার মৃত্যুদণ্ড হলে আরও বেশি খুশি হতাম।”   

নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, মূল আসামি নূর হোসেন ও তারেক সাঈদ রায়ের সময় ভাবলেশহীন ছিলেন। তাদের এ আচরণ প্রমাণ করে, ‘তারা খুনি’।

“রাষ্ট্রপক্ষ সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। যে নয়জনের ফাঁসি হয়নি, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর তা দেখে প্রয়োজনে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”