কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস ৩ ডিসেম্বর

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া হানাদারমুক্ত হয়ে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা উড়েছিল ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2016, 11:10 AM
Updated : 2 Dec 2016, 11:10 AM

সেদিন সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কাকডাঙ্গা রাজাকার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে দখলে নেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যদের আত্মসমপর্ণের মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় কোটালীপাড়া।

কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, দিবসটি পালন উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে উপজেলার টুপুরিয়া গ্রামে নির্মিত ‘হেমায়েত বাহিনী স্মৃতি যাদুঘর’ চত্ত্বরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ূর কবির বক্তব্য রাখেন। দলের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, যুদ্ধ শুরু হলে এ অঞ্চলের সন্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক হেমায়েতউদ্দিন দেশে পালিয়ে এসে সাড়ে তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলেন।

তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে গঠিত হেমায়েত বাহিনীর জন্য কোটালীপাড়ায় তিনি একটি ট্রেনিং ক্যাম্পও গড়ে তোলা হয়। যেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।

যুদ্ধ চলাকালীন কোটালীপাড়া সদর, হরিনাহাটি, মাটিভাঙ্গা, বাশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া,রামশীল,জহরের কান্দিসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় হেমায়েত বাহিনী। এ ছাড়া ছোট যুদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকটি।

সকল যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন হেমায়েত বাহিনী প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রম।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মুজিবুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শুধু যৌথবাহিনীই দেশ মাতৃকার মুক্তিযুদ্ধ করেনি। পাক হানাদার বাহিনীকে এদেশ থেকে তাড়াতে তৎকালীন সময়ে এদেশে কয়েকটি অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল কয়েকটি বাহিনী।

“ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল হেমায়েত বাহিনী। আমরা এই হেমায়েত বাহিনীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছি।”

কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সামচুল হক বলেন, “৭২টি দলের সমন্বয়ে গঠিত হেমায়েত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় সাত হাজার। হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ২৪ জন আহত ও ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।”

কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়া বলেন, “হেমায়েত বাহিনীর সদস্যরা ১৩৪টি অপারেশন পরিচালনা করেন। এর মধ্যে অন্যতম রামশীলের যুদ্ধে হেমায়েত উদ্দিন মারত্মকভাবে আহত হন।”

মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য হেমায়েত উদ্দিনকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়।