রাবি অধ্যাপক রেজাউলকে কুপিয়ে হত্যা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2016, 02:32 AM
Updated : 23 April 2016, 02:32 AM

রাজশাহী নগরীতে বাড়ির কাছেই এই অধ্যাপককে মোটর সাইকেলে আসা দুই যুবক কুপিয়ে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া থানার ওসি শাহদাত হোসেন।

অধ্যাপক রেজাউল লেখালেখি করতেন, যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও। 

কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

শহরের বোয়ালিয়া থানা এলাকার শালবাগানের সপুরা এলাকায় থাকতেন অধ্যাপক রেজাউল। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির কাছেই বটতলা মোড়ে আক্রান্ত হন তিনি।

ওসি শাহদাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বাস ধরার জন্য অধ্যাপক রেজাউল করিম (৬১) শালবাগান মোড়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন।

“বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে আসার পরই দুজন যুবক মোটরসাইকেলে এসে তাকে ঘাড়ে কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।”

এ এফ এম রেজাউল করিম

বাগমারার দরগাবাড়ি এলাকায় এই শিক্ষকের পৈত্রিক বাড়ি। শালবাগানের সপুরা এলাকায় থাকতেন তিনি।

তার ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। মেয়ে রেজোয়ানা হাসিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।

বটতলায় যে বাড়ির সামনে এ শিক্ষক খুন হন সেই বাড়ির মালিক জাকিয়া সুলতানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “ বাড়ির বাইরে এলে স্যারের লাশ দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দিই। তবে,ঘটনা সংঘঠিত হবার সময় আমরা দেখিনি।”

রেজাউল করিমের স্ত্রী হোসনে আরা বলেন, “ভালো মানুষ বাসা থেকে বের হয়ে গেল। এরপর রাস্তার মধ্যে খুন হলো। তাকে কে বা কারা খুন করলো?”

তার সঙ্গে কারো শক্রতা বা কোনো ঝামেলা ছিল না বলে দাবি করেনি তিনি।

নিহতের ভাই সাজিদুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অধ্যাপক রেজাউল ‘কোমলগান্ধার’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক এবং ‘সুন্দরম’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টা ছিলেন।  

তার ভাইকে কেউ কখনও কোনো ধরনের হুমকি দিয়েছিল কি না, তা জানাতে পারেনি সাজিদুল করিম।

‘সুন্দরম’ এর সভাপতি হাসান রাজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার খুব ভালো সেতার বাজাতেন। তিনি শালবাগানে একটি গানের স্কুল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলেন।”

হত্যাকাণ্ডস্থল

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি বা মামলা বিষয়ে সন্ধ্যায় জরুরি সভা থেকে সিধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.শহীদুল্লাহ্।

লাশ উদ্ধার ও ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি শাহদাত।

রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার সুশান্ত চন্দ্র রায় জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুই বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খুন হন আরেক অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শফিউলকে হত্যার পর জঙ্গিদের দায় স্বীকারের খবর এলেও পরে পুলিশের তদন্তে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার ধারণাটি নাকচ করা হয়।

পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন অধ্যাপক শফিউল।

তারও বেশ আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুজন শিক্ষক অধ্যাপক এম ইউনুস এবং অধ্যাপক এস তাহের হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।