কুয়াকাটা পৌরবাসীর নজর কে হচ্ছেন প্রথম মেয়র

২০১১ সালে গঠিত কুয়াকাটা পৌরসভায় কে হচ্ছেন প্রথম মেয়র তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার প্রথম পৌর মেয়র হওয়ার স্বপ্নও দেখছেন অনেকে। কুয়াকাটা ছাড়াও প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর এলাকা।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিসঞ্জয় কুমার দাসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2015, 03:40 PM
Updated : 25 Nov 2015, 04:27 PM

আসন্ন নির্বাচনে কলাপাড়া ও কুয়াকাটায় প্রতিদ্বন্দ্বী সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলার নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা এরই মধ্যে দিন-রাত গণসংযোগ শুরু করছেন।

দুটি পৌর নির্বাচনে সম্ভাব্য অন্তত দুই ডজন মেয়র পদপ্রার্থী, শতাধিক কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কুয়াকাটার সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীরা হলেন কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক লতাচাপলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক মনির আহম্মেদ ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ বারী আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অনন্ত মুখার্জী, পৌর যুবলীগের সভাপতি সাগর মোল্লা।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ মুসুল্লী।

জাতীয় পার্টির কুয়াকাটা পৌর শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন হাওলাদার প্রার্থী হবেন বলে আলোচনায় উঠে আসছে।

এছাড়াও স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী হতে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাইদুর রহমান আবু সাইদ মিয়া, কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কুয়াকাটা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মওলানা মাইনুল ইসলাম মান্নান।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মনির আহম্মেদ ভূঁইয়াসহ সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে আপাতত কিছু ভাবছেন না তারা।

তবে দল যদি প্রভাবিত হয়ে যোগ্য নেতৃত্বের মূল্যায়ন না করে তবে জনমত যাচাইয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথাও জানালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী।

জাপা নেতা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “ইউনিয়ন ভাগ হয়ে গঠিত পৌর সভার উন্নয়নে ভোটাররা এবার মেয়র হিসেবে কাকে বেছে নেবেন তা তারাই ঠিক করবেন।”

কলাপাড়া পৌর মেয়র পদে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাকিবুল আহসান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল হাওলাদার, পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম বেপারী, আওয়ামী লীগ নেতা ও টিয়াখালী ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আখতারুজ্জামন কোক্কা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম ও উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ শিকদার প্রচারণায় নেমেছেন।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র হুমায়ুন শিকদার, পৌর বিএনপির সভাপতি নুর বাহাদুর তালুকদার, উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক গাজী মোহাম্মদ ফারুক ও বিএনপিতে সদ্য যোগদানকারী সাবেক জাপা নেতা ও কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. নুরুল হক মুন্সির নামও শোনা যাচ্ছে।

তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কোন প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।

কলাপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল হাওলাদার জানান, দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

কলাপাড়া ও কুয়াকাটা পৌর মেয়র পদে প্রচারণা চালানো বিএনপির একাধিক প্রার্থীর দাবি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দুটি পৌর সভায় মেয়র হবেন বিএনপি জোটের মনোনিত প্রার্থীরা।

কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কলাপাড়ার বর্তমান পৌর মেয়র ও সম্ভাব্য প্রার্থী এসএম রাকিবুল আহসান আবারও দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন আওয়ামী লীগ নেতারা।”

তিনি জানান, মনোনয়ন না পেলে প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে সবাইকে। সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যদি কেউ প্রার্থী হয় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানান কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনোনয়ন প্রত্যাশী এই নেতা।

কলাপাড়া পৌর সভায় মোট ভোটার ১১ হাজার ২৬।

২০১১ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ৩৪নং লতাচাপলী ইউনিয়নের এক হাজার ১৪০ দশমিক ৫৫ একর জায়গা নিয়ে কুয়াকাটা পৌরসভা গঠন করে মহাজোট সরকার।

এরপর থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পৌর প্রশাসক করে ১৯ সদস্যর পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে চলে আসছে পৌর সভার কার্যক্রম।

এখানে ৯টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৮৪৫।