বাঁধ ভেঙে ফসলি জমি প্লাবিত, বালুর বস্তা ফেলে মেরামত

নীলফামারীতে তিস্তা সেচ প্রকল্পের একটি খালের পাড় ভেঙে শতাধিক একর জমির ফসল প্লাবিত হয়েছে।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2015, 01:35 PM
Updated : 22 Nov 2015, 06:40 PM

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাঁধে ইঁদুর গর্ত করায় খালের পাড় নরম হয়ে ভাঙনের এ ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার রাতে নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই গ্রামে সেচ প্রকল্পের দিনাজপুর খালের দক্ষিণ তীর বাঁধ ধসে যায় বলে জানান নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মকছুদার রহমান।

ওই ক্যানেলের অন্তত ২০ ফিট তীর ভেঙে পার্শ্ববর্তী জমির পাকা-কাটা আমন ধানও রবি শস্য পানিতে তলিয়ে যায়।

সিংদই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, “শনিবার সারাদিন ক্যানেলে পানি ছিল না। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ক্যানেলে পানি আসে। ক্যানেলের বাঁধে ইঁদুরের গর্তের কারণে পানি ঢুকে ভাঙনের এ ঘটনা ঘটে।”

একই গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান ভুট্টো বলেন, “রাত সাড়ে ৮টার দিকে শো-শো আওয়াজ পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি ক্যানেলের বাঁধ ভেঙে আমার দুই বিঘা জমিসহ আশপাশের অন্তত শতাধিক একর জমিতে পানি ঢুকছে।”

“এ সময় আমার এক বিঘা জমিতে থাকা কাটা আমন ধান হাঁটু সমান কাদামাটিতে তলিয়ে গেছে, আর বাকি এক বিঘা জমিতে থাকা কাটা ধান ভেসে গেছে।”

আরেক কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে গিয়ে দেখি আমার ২০ বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। সেইসঙ্গে এনজিও থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পাঁচ বিঘা জমিতে সদ্য লাগানো আলুর ক্ষেতও শেষ।

একই গ্রামের কৃষক সামসুদ্দিন অভিযোগ করেন, ভাঙনের খবর দেওয়ার জন্য নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরেনি।

ক্যানেলের বাঁধগুলোতে ইঁদুর আর শিয়ালের গর্তে ভরা। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ভাঙন হয়েছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।

তারা আরও অভিযোগ করেন, ভাঙনের আগেও এলাকার কৃষকরা মৌখিকভাকে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও তারা কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।

তারা বলেন, খবর দেওয়ার পর সারারাত যাওয়ার পর রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুইজন কর্র্মকর্তা আসেন এবং বালুর বস্তা আর বাঁধের মাটি কেটে ভাঙাস্থান বন্ধের কাজ শুরু করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মকছুদার রহমান বলেন, “রাতে কেউ আমাদের খবর দেয়নি। সকাল সোয়া ১০টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই।”

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বালুর বস্তা আর মাটি ফেলে ভাঙন অংশটি মেরামত করা হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ফসলের তালিকার কাজ চলছে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়ে কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।