সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ‘নৈরাজ্যমুক্ত রাখতে’ খালেদার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান বলেন, “খালেদার অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত বিক্ষুব্ধ মানুষ নির্বাচনী প্রচারণায় তাকে বাধা দিচ্ছে, কালো পতাকা দেখাচ্ছে, প্রতিবাদ করছে।
“সর্বশেষ গতকাল (সোমবার) তিনি গণসংযোগের নামে কারওয়ানবাজারে উসকানিমূলক বক্তব্য রাখছিলেন। তখন মানুষ বিক্ষোভ করেছে। আর খালেদার নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন, তারা তাদের উপর গুলি ছুড়েছে, যা এক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।”
খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপিসমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে নির্বাচনী পথসভায় অংশ নিতে গিয়ে সোমবার কারওয়ান বাজারে হামলার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া।
তার বক্তব্যের শেষদিকে এক দল লোক ‘ছি ছি খালেদা- খালেদা ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। আশপাশের ভবনের উপর থেকে খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ করে ঢিল ছোড়া হলে তার কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী ও সাংবাদিক আহত হন।
খালেদা জিয়া অক্ষত থাকলেও ইটের আঘাতে তার গাড়ির এক পাশের কাচ ফেটে যায়। বহরের গাড়িগুলো ঘুরে এফডিসির দিকে এগোতে গেলে এক দল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপি বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া সারা দেশে হরতাল ডেকেছে। অন্যদিকে কারওয়ান বাজারের ঘটনাটিকে খালেদা জিয়ার ‘নাটক’ বলেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালেদার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা।
হাছান মাহমুদ বলেন, “মানুষ হত্যার আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে ব্যর্থ খালেদা এখন নতুন কৌশল নিয়েছেন। তাই নির্বাচনী প্রচারণার নামে উসকানি দিয়ে বিক্ষিপ্ত মানুষকে প্রলুব্ধ করছেন বিক্ষোভ দেখাতে। যার মাধ্যমে বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তিনি নির্বাচনকে নষ্ট করতে চান।
“আর সরকারকে এর দায় দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান তিনি। কারণ তিনি জানেন, নির্বাচনে তার প্রার্থীকে মানুষ লাল কার্ড দেখাবে।”
কারওয়ান বাজারের ঘটনার তদন্ত করে ‘গুলিবর্ষণকারীদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানান আওয়ামী লীগের এ নেতা। সেই সঙ্গে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেন।
কমিশনের উদ্দেশে হাছান বলেন, “তাকে (খালেদা) নিবৃত্ত করুন। অন্যথায় খালেদার মতো নির্বাচন কমিশনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”
বিএনপির হরতালের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “খালেদার লজ্জা থাকা উচিত, কারণ তিনি তিন মাস হরতাল ডেকে ব্যর্থ হয়েছেন। তার লজ্জা থাকলে তিনি হরতাল ডাকতেন না। কিন্তু তিনি ডেকেছেন বোমা মারতে, কারণ তিনি এখন আর রাজনৈতিক নেত্রী না, তিনি পেট্রোলবোমার নেত্রী।”
অন্যদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুও মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।