খালেদাকে হত্যাই ছিল উদ্দেশ্য: এমাজউদ্দীন

সরকারপ্রধান ও মন্ত্রীদের ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যেই ‘হত্যার উদ্দেশ্যে’ খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সিটি নির্বাচনে বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে গঠিত আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2015, 09:09 AM
Updated : 21 April 2015, 12:17 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা করা হয়েছে। গাড়ির যে অংশে তিনি বসা ছিলেন, সেদিকেই তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি করা হয়েছে। কিন্তু গাড়িটি বুলেটপ্রুফ হওয়ায় ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।”

সোমবার বিকালে কারওয়ান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপিসমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় হামলার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া।

তার বক্তব্যের শেষ দিকে পাশ থেকে এক দল লোক ‘ছি ছি খালেদা- খালেদা ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় আশপাশের ভবনের উপর থেকে খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ করে ঢিল ছোড়া হয়। ঢিলে তার কয়েকজন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী ও সাংবাদিক আহত হন।

খালেদা জিয়া অক্ষত থাকলেও ইটের আঘাতে তার গাড়ির এক পাশের কাচ ফেটে যায়। বহরের গাড়িগুলো ঘুরে এফডিসির দিকে এগোতে গেলে এক দল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া সারা দেশে হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

অন্যদিকে কারওয়ান বাজারের ঘটনাটিকে খালেদা জিয়ার ‘নাটক’ বলেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আর হামলার অভিযোগ ‘শতভাগ সত্যি নয়’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, “খালেদা জিয়া ওই এলাকায় গেলে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের তাড়া করে। এ সময় তার নিরাপত্তা কর্মীরা জনতার উপর চড়াও হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়ে বিশৃঙ্খলা ঘটে।”

এ ঘটনায় খালেদার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার একটি মামলাও করেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা। 

পুরো ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এমাজউদ্দীন বলেন, “নির্বাচনের আটদিন আগে এ ধরনের হামলার ঘটনা সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করবে। আমি মনে করি, এই ঘটনার পর সরকার পক্ষ থেকে দুঃখবোধ হওয়া উচিৎ ছিল। তা না করে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করতে ক্ষমতাসীনরা উল্টো মামলা করেছে।”

হামলায় সরকার সমর্থকরা জড়িত ছিল অভিযোগ করে বিএনপিপন্থি এই পেশাজীবী নেতা বলেন, “পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ছাত্রলীগের আল আমিন হামলা করেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী এই হামলাকে নাটক বলে অভিহিত করেছেন। এটা দুঃখজনক।”

এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান  এমাজউদ্দীন আহমদ।

আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ বিএনপি প্রধানের উপর হামলার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বক্তব্যকে দায়ী করে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে সেনা মোতায়েন এবং ভোটকেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর দাবি জানান।

সেইসঙ্গে সরকারসমর্থিত প্রার্থীর ‘পক্ষ অবলম্বন করা’ কর্মকর্তাদের বদলি করারও আহ্বান জানান তিনি।

অন্যদের মধ্যে আর্দশ ঢাকা আন্দোলনের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।