ভোটের আগে সিটি করপোরেশনে ‘নিয়োগ-পদোন্নতি’ বন্ধের দাবি বিএনপির

নির্বাচন প্রভাবিত করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নিয়োগ-পদোন্নতির তৎপরতা চলছে অভিযোগ করে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2015, 09:41 AM
Updated : 19 April 2015, 09:41 AM

২৮ এপ্রিল ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিটি করপোরেশনে এ ধরনের উদ্যোগ স্থগিত রাখতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা।

রোববার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “বর্তমান সরকারের ‘দলবাজ’ প্রশাসন নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দলীয় লোকজনকে মুদ্রাক্ষরিক, কম্পিউটার অপারেটর, স্টেনোগ্রাফার, ঝাড়ুদার পদে ১০৯ জনকে নিয়োগ দিচ্ছে বলে পত্র-পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে।

“কেবল তাই নয়, তারা সিটি করপোরেশনের ‘দলীয়’ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতিও দিচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বরাদ্দ দিচ্ছে। আমরা মনে করি, ক্ষমতাসীনরা সিটি নির্বাচনে পরাজয় আঁচ করতে পেরে ‘এপ্রিল ফাইনালে’ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।”

নির্বাচনী আইনে তফসিল ঘোষণার পর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের নিয়োগ-পদোন্নতির ‘এখতিয়ার নেই’ জানিয়ে তা বন্ধের জন্য নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ প্রত্যাশা করেন বিএনপির এই নেতা।

দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ ব্রিফিং হয়।

শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক নেতার অবর্তমানে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পাওয়া আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালযের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুল মালেক সাহেব বলেছেন, এসব কর্মকাণ্ড নাকি রুটিন মাফিক। আমরা বলতে চাই, তফসিল ঘোষণার পর কোনো নিয়োগ, পদোন্নতি, দোকান বরাদ্ধ কিংবা কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে না- এটাই নিয়ম।”

আসন্ন নির্বাচন প্রভাবিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “বাজেটে ‘জুন ফাইনাল’ বলে একটা কথা আছে। নতুন বাজেটের আগে বরাদ্দ করা সব অর্থ খরচ করতে হয়। তেমনি ঢাকার সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা তাদের ব্যাপক ভরাডুবি আঁচ করতে পেরেই ‘এপ্রিল ফাইনালের’ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে আমরা মনে করি।”

নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যাতে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড না করতে পারেন এবং তাদের পথচলা কঠিন করে তুলতে দলীয় ‘ক্যাডারদের’ তড়িঘড়ি করে ওই সব পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

শনিবার সেগুন বাগিচা ও আদালতপাড়ায় বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের প্রচারের সময় সরকার সমর্থকরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন রিপন।

সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে থাকলেও তারা ‘নিস্ক্রিয়তা’ দেখায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, “সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি ওই সব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে জনগণের কাছে বার্তা যাবে- সরকার ‘৫ জানুয়ারি মার্কা’ নির্বাচন করতে যাচ্ছে।”

নির্বাচন কমিশনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দসই মানুষকে ভোট দিতে পারে।

“কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাস্তবে নির্বাচন কমিশন সক্রিয় নয়। বিভিন্ন স্থানে নিয়মের ব্যত্যয় হচ্ছে। পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পরও নির্বাচন কমিশন আমলে নিচ্ছে না। তারা জেগে ঘুমিয়ে আছে।”

সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল করীম শাহিন, শাম্মী আখতার, টিএস আইয়ুব, মাস্টার তমিজউদ্দিন, তকদির হোসেন জসিম, শামসুল আলম তোফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।