পাকিস্তানপন্থীরা নিশ্চিহ্ন না হলে দেশ সংকটে: এইচ টি ইমাম

পাকিস্তানপন্থীদের নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের অস্তিত্ব সংকটের মুখে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2015, 01:39 PM
Updated : 28 Feb 2015, 01:39 PM

শনিবার চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াতের বর্বরোচিত তাণ্ডবের তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ইমাম বলেন, সকলে মিলে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে। পাকিস্তানপন্থীরা নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের অস্তিত্ব সবসময় ভীতির মধ্যে থাকবে, সংকটের মধ্যে থাকবে।

পাকিস্তাপন্থীদের রাজনৈতিক বা অন্য যে কোন উপায়ে ধ্বংস করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা যে অস্ত্র ব্যবহার করে, যে অস্ত্র বোঝে সেই অস্ত্রেই তাদের ঘায়েল করতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।”

জনগণ বিএনপি-জামায়াতের চলমান হরতাল-অবরোধ প্রত্যাখান করেছে করেছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম যেখানেই যাবেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পত্রিকার সমীক্ষায়ও বলছে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ হরতাল-অবরোধ চায় না।

‘কোথাও কল-কারখানা বন্ধ নেই’ উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, “পেট্রোল বোমা মারার জন্য যারা অর্থ যোগান দিচ্ছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো সব ঠিকঠাক মতো চলছে। এটা একপ্রকার মোনাফেকি।”

দেশের জনগণ ও তাদের সমর্থন আওয়ামী লীগের পক্ষে রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, কেউ বিএনপি-জামায়াতের এসব অত্যাচার সহ্য করবে না।

দেশে নির্দলীয় কেউ নেই দাবি করে বলেন, যারা এখন নিজেদের সুশীল বলে দাবি করছেন তাদের অনেকেই একসময় উপদেষ্টা ছিলেন। তাদের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে।

“কই তারাতো পুড়িয়ে মারা, আগুন দেওয়ার কথা তো বলছেন না”, প্রশ্ন রাখেন তিনি।

স্বাধীনতার পর থেকে ৪৪ বছরে সব হত্যাকাণ্ড ও মা-বোনদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা বিএনপি-জামায়াতের আমলে ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে বিরোধী দলের কারও প্রাণ সংহার করা হয়নি।

‘এইটাই মুক্তিযুদ্ধের ও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বিএনপি-জামায়াত মানেই ‘আগুন সন্ত্রাস’ উল্লেখ করে বলেন, তারা এখন দেশের জনগণের কাছে আতংকের নাম।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এখন আর জনগণের নেত্রী নন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি এখন পেট্রোলবোমা-সন্ত্রাসের নেত্রী। আইএস বা তালেবান জঙ্গিদের নেতারা যে আচরণ করেন খালেদা জিয়ার আচরণও একই।

খালেদা জিয়া ও জামায়াতের নেতারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় সাধারণ যে নিয়ম মানা হয় এরা তাও মানছেন না। একদিন খালেদা জিয়ার বিচারও হবে।

সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. অনুপম সেন বলেন, যারা খুনী হত্যাকারী তাদের সঙ্গে কোনো কথা হতে পারে না।

যেসব সুশীল নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বলেন তারা ভয়ানক অন্যায় করছেন মন্তব্য করে অনুপম সেন বলেন, সেসব বুদ্ধিজীবীদের ধিক্কার জানাই।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ, নগর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম।

 অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম অঞ্চলে হরতাল-অবরোধে পেট্রোল বোমা ও হাতবোমা হামলায় নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহতরা উপস্থিত থেকে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

পেট্রোল ও হাতবোমা হামলায় হতাহতদের নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে হতাহত এবং দগ্ধদের নিয়ে বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও সংবাদ নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়।