রিজভী রিমান্ডে

নাশকতার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীকে তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ, ‘অজ্ঞাত স্থান’ থেকে বিবৃতি পাঠিয়ে হরতাল-অবরোধের ঘোষণা দিতেন যিনি।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2015, 09:18 AM
Updated : 1 Feb 2015, 09:59 AM

ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবির রাজ রোববার বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে দুপুরে রিজভীকে আদালতে হাজির করে গত ২৬ জানুয়ারি গুলশান-বাড্ডা লিঙ্ক রোডে অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন বাড্ডা থানার এসআই মোশাররফ হোসেন।

রিমান্ড আবেদন বাতিল ও রিজভীর জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ বিএনপির কয়েক আইনজীবী রিজভীর পক্ষে শুনানি করেন।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আব্দুল্লাহ আবু ও অতিরিক্ত পিপি শাহ আলম তালুকদারসহ কয়েক আইনজীবী।

অবরোধে নাশকতার পিছনে উস্কানি ও অর্থ যোগানের অভিযোগ আনা হয়েছে রিজভীর বিরুদ্ধে।

গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপসহ নাশকতার বিভিন্ন ঘটনায় রিজভীর সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন-মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি চান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

উভয় আবেদনের শুনানি শেষে জামিন আবেদন বাতিল করে রিজভীর তিন দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন বিচারক।

শনিবার ভোররাতে বারিধারার একটি বাড়ি থেকে রিজভীকে গ্রেপ্তারের পর বিকালে তাকে বাড্ডা থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। পরে সন্ধ্যায় গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয় তাকে।

কিছু দিন ধরে অজ্ঞাত স্থান থেকে রিজভী নিয়মিত বিবৃতি পাঠিয়ে হরতাল-অবরোধের ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ শুক্রবার বিকাল ৫টায় দলের পক্ষে এক বিবৃতিতে অবরোধের পাশাপাশি সারাদেশে রোববার থেকে টানা তিন দিনের হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত ৩ জানুয়ারি রাতে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়লে পুলিশ তুলে নিয়ে রিজভীকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

তার চার দিনের মাথায় গভীর রাতে সেখান থেকে চুপিসারে বেরিয়ে যান রিজভী। এর পর থেকেই গোপন স্থান থেকে বিবৃতির মাধ্যমে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছিলেন তিনি।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে ঢাকায় সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দেন। এর মধ্যে প্রতি সপ্তাহেই দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতালও ডাকছে বিএনপি জোট।

এসব কর্মসূচিতে নাশকতায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪০ জনের, যাদের বেশিরভাগই গাড়িতে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।