পাশাপাশি একই সময়ের মধ্যে সরকারকে দুষ্কৃতকারীদের ‘দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ’ প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবে রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি খেদ প্রকাশ করে ড. কামাল বলেন, “এভাবে একটা সভ্য দেশ চলতে পারে না। বিরোধী দলকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেট্রোল বোমাসহ যাবতীয় সহিংসতা বন্ধের ঘোষণা দিতে হবে। একই সঙ্গে সরকারকেও সন্ত্রাসীদের দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়ার ঘোষণা থেকে ফিরে আসতে হবে। গণতন্ত্র আর পেট্রোল বোমা-গুলি একসঙ্গে চলতে পারে না।”
গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
গত ২৫ দিনের এই অবরোধ হরতালে অন্তত ৪০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
এদিকে আগামী ২ তারিখ এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। এর মধ্যেই গত ১ তারিখ থেকে সারা দেশে ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
ড. কামাল বলেন, “যারা মনে করেন, পেট্রোল বোমা মেরে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবেন, তারা যেমন ভুল করছেন, তেমনি যারা গুলি করে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছেন তারাও ভুল করছেন। পাকিস্তান পিরিয়ডে আইয়ূব, ইয়াহিয়া খানরাও একই কথা বলেছিল। তারা কি আন্দোলন দমাতে পেরেছিলো?”
স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা বলেন, “আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়া প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। দেশে সম্প্রতি যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তার জন্য আজ থেকে ৪৩ বছর আগে লাখো যুবক জীবন উৎসর্গ করেনি।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মাদ বলেন, “এমনিতেই বাংলাদেশের শ্রমিকরা অন্যায্য মজুরি, নিরাপত্তাহীন কর্মপরিবেশসহ নানা বঞ্চনার শিকার। এখন যোগ হয়েছে পেট্রোল বোমায় জীবন নাশের আশঙ্কা এবং একে কেন্দ্র করে পুলিশের গ্রেপ্তার বাণিজ্য। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যতই অনৈক্য থাক না কেন সাধারণ শ্রমিকদের শোষণ বঞ্চনার ক্ষেত্রে তারা এক।”
বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে বেরিয়ে আসতে শ্রমিক ও সাধারণ মানুষদের এক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ, গার্মেন্ট শ্রমিক নেতা গোলাম কাদির, মঈনুদ্দিন মন্ডল প্রমুখ।