দুই তালাই ‘সমান অপরাধ’, অনশনে বসবেন বি. চৌধুরী

ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত বিএনপি নেত্রীকে সমবেদনা জানাতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়াটা খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তালা দিয়ে তাকে বেরোতে না দেওয়ার ‘সমান অপরাধ’ বলে মনে করেন এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2015, 09:20 AM
Updated : 25 Jan 2015, 11:06 AM

রাজনৈতিক এই রেশারেশি বাদ দিয়ে সাত দিনের মধ্যে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। তা না হলে অনশনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রোববার বারিধারায় এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে কথা বলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি বি. চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের স্বার্থে দুই নেত্রীকে আলোচনায় বসতেই হবে। তা না হলে দেশবাসীকে আমি আহ্বান জানাব, গণঅনশনে বসার।”

বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রাণহানির সঙ্গে দেশের অর্থনীতিও ‘ধ্বংস’ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বি. চৌধুরী।

তাই সমঝোতার জন্য দুই নেত্রীর সংলাপ এখন সাধারণ মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“দেশ সম্পর্কে সাধারণ নাগরিকরা সবাই উদ্বিগ্ন। তার কারণ দুই নেত্রী কথা বলছেন না। দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে দুই নেত্রীকে বলব, যদি রাজনীতিতে থাকতে চান তবে সব সংঘাত-বিভেদ ভুলে যান। আলাপ করুন-আপনাদের কথা বলতেই হবে। কথা না বললে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হয় না,” বলেন তিনি।

শনিবার মালয়েশিয়ায় আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গুলশানে তার কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ প্রসঙ্গে বি. চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সেখানে পলিটিক্স বা আলোচনার জন্য যাননি। একজন মা হয়ে আরেকজন মাকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন।এটা রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য ইতিবাচক।”

তবে প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার পরে খালেদার অসুস্থতার কথা বলে কার্যালয়ের ফটকের তালা বন্ধ রাখাটা ‘অপরাধ’ বলে মনে করছেন তিনি।

“বিএনপি চেয়ারপারসনকে যেভাবে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল তেমনি প্রধানমন্ত্রীকেও তালা খুলে দেওয়া হয়নি। দুটি তালা দেওয়াই সমান অপরাধ,” বলেন তিনি।

দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে গত ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি পালনের জন্য খালেদা জিয়া বেরোনোর প্রস্তুতি নিলে ওই কার্যালয়েরই ফটকে তালা দেয় পুলিশ। তার দুদিন আগে সেখানে গিয়ে পুলিশি ঘেরাওয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হন খালেদা জিয়া। পরে পুলিশ সরলেও ওই কার্যালয়ে অবস্থান করছেন তিনি।

খালেদা জিয়াকে কার্যালয়ে আটকে দেওয়ার পর সেখানে গিয়ে পুলিশি বাধায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বি. চৌধুরী।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে পুলিশের ওই আচরণ ‘গণতন্ত্রের জন্য অশুভ সঙ্কেত’ মন্তব্য করে সে সময় তার প্রতিবাদ করেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

সব দলের অংশগ্রহণে একটি ‘নিরপেক্ষ’ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক সংকট কাটবে না বলে মনে করেন বি. চৌধুরী।

তবে তার জন্য বিএনপির দাবি অনুযায়ী নির্দলীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না বিকল্পধারার সভাপতি।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচন হতে পারে। তবে তা নিরপেক্ষ হতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশেই এই চর্চা রয়েছে।”

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের আগামী এক বছর পাল্টাপাল্টি কটূক্তি না করার আহ্বান জানান বি. চৌধুরী।

“কেনো কু-কথা বলবেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যারা কটূক্তি করছে তারা ভুল পথে আছে। এটি জনগণ চায় না।”