‘বাবার করা আইনও মানেন না শেখ হাসিনা’

বিচারপতিদের অভিশংসনের বিষয়ে শেখ হাসিনা তার বাবার করা আইনও মানেন না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য সানাউল্লাহ মিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2014, 10:43 AM
Updated : 21 Sept 2014, 10:43 AM

সংসদকে উচ্চ আদালতের বিচারকদের সরানোর ক্ষমতা দিয়ে সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে রোববার সুপ্রিম কোর্টে কালো পতাকা মিছিলের পর এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ইতোমধ্যে সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে সোমবার আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।

কর্মসূচির অংশ হিসাবে রোববার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতি ভবনের ওপর তলা থেকে কালো পতাকা মিছিল করে বার কাউন্সিল। মিছিলটি সমিতি ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় সমাবেশে সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান সংসদ থেকে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সেই সংসদের কাছেই এই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।”

বার কাউন্সিলের আরেক সদস্য এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকার ‍সংবিধানে সংশোধনী এনেছে।

তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টসহ সকল আদালত সরকার রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। বিচার বিভাগ কলুষতা ও রাজনীতিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা সংগ্রাম করে যাবে।”

বিএনপির অন্যতম যুগ্মমহাসচিব খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক। আর সানাউল্লাহ মিয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক। 

সমাবেশে সুপ্রিম কোর্ট বারের সহ-সভাপতি এম খালেদ আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান ও খন্দকার রেজাউল করিম।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা এর সমালোচনা করে আসছিলেন, যার মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও।

আইনজীবীদের আপত্তির পাশাপাশি বিএনপির বিরোধিতার মধ্যেই গত ১৭ সেপ্টেম্বর সংসদে পাস হয় সংবিধান সংশোধন বিল, যার মধ্য দিয়ে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরে পান আইনপ্রণেতারা।

বিএনপিসহ দলটির সমর্থক আইনজীবী নেতারা বলে আসছেন, এই সংশোধনের মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের ওপর সরকারের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পেল।

ক্ষমতায় ফিরলে আওয়ামী লীগ আমলের সংশোধনীগুলো বাতিলের ঘোষণাও দিয়েছে বিএনপি।

তবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর দাবি, বিএনপি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা ‘না বুঝেই’ এই বিলের সমালোচনা করছেন।

“আমরা শুধু বাহাত্তরের অনুচ্ছেদ প্রতিস্থাপন করছি। বিচারপতিদের অভিশংসন নয়, অপসারণও করবে না সংসদ। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংসদ তা অনুমোদন করবে।”