Published : 10 Nov 2013, 12:02 PM
আগের হরতালগুলোতে সংসদ ভবন চত্বরে মিছিল-সমাবেশে বিরোধী দলের অন্তত ১০-১২ জন সদস্যকে দেখা গেলেও রোববারের চিত্র ছিল ভিন্ন।
সকাল পৌনে ১০টায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবন থেকে একসঙ্গে সংসদ চত্বরে ঢোকেন সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়া, নিলোফার চৌধুরী মনি, রেহানা আক্তার রানু, শাম্মী আক্তার এবং রাশেদা বেগম হীরা।
এই পাঁচজনই হাত ছুড়ে শ্লোগান তোলেন- ‘এক দফা এক দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি’, ‘বিএনপি অফিস ঘেরাও কেন, খুনি হাসিনা জবাব চাই’।
গত বুধবারও বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে ১৩ জন সংসদ সদস্য সংসদ চত্বরে মিছিল-সমাবেশে অংশ নেন।
উপস্থিতি কম কেন জানতে চাইলে আশিফা আশরাফী পাপিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “নেত্রী (খালেদা জিয়া) পুরুষ এমপিদের এলাকায় থাকতে বলেছেন, এজন্য আজ আপারা থাকবেন।”
বিভিন্ন ঘটনা ও বক্তব্যের কারণে আলোচিত-সমালোচিত এই পাঁচ নারী সাংসদ মিলেই পরে হরতালের সমর্থনে ‘সমাবেশ’ করেন।
অন্য সময় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আসা তাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সমাবেশের আশে-পাশে থাকলেও রোববার সেখানে গণমাধ্যম কর্মীদের সংখ্যাই ছিলো বেশি।
সমাবেশের এক পর্যায়ে পাপিয়া বলেন, “আমাদের পুরুষ এমপিদের বাড়িতে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। তাদের আসতে দিচ্ছে না। যে কোনো সময় তারা গ্রেপ্তার হতে পারেন। আর গ্রেপ্তার হলে চলমান এই আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্যই আমরা মিছিল করছি।”
বিএনপির সংসদ সদস্য মওদুদ আহমদ ও এমকে আনোয়ার গ্রেপ্তারে হওয়ায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সমালোচনা করেন পাপিয়া।
তিনি বলেন, “শিরীন শারমিন আপনি ফাঁকা কলসি স্পিকার। দুইজন এমপিকে গ্রেপ্তারের জন্য কীভাবে আপনি অনুমতি দিলেন?”
অবশ্য সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তরা জানান, সংসদ এলাকা থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে স্পিকারের অনুমোদন প্রয়োজন হলেও বাইরে এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
শুক্রবার বিকালে ১৮ দলীয় জোটের মহাসচিবদের বৈঠক শেষে ৭২ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর রাতে কারওয়ানবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার ও রফিকুল ইসলাম মিয়া। পরে মধ্যরাতে গুলশানে গ্রেপ্তার হন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আওয়াল মিন্টু এবং খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী সামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
নেতাদের গ্রেপ্তারের কারণে পরে বুধবারও হরতাল ঘোষণা করে বিএনপি।
পাপিয়া দাবি করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা শনিবার রাতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পিয়াস করিমের বাড়িতেও হাতবোমা ফাটিয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন এবং গুলশান কার্যালয়ের কাইরে পুলিশ মোতায়েনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তার গায়ে যদি একটি চুলের আঁচড়ও পড়ে, তবে মনে রাখবেন শেখ হাসিনা, ওই আগুন ভারতের দাদাদের ফায়ার সার্ভিসও নেভাতে পারবে না।”
সংসদ শাম্মী আক্তার ও রাশেদা বেগম হীরাও ‘সমাবেশে’ আরো বক্তব্য দেন।