দাতব্য ট্রাস্ট: তদন্ত কর্মকর্তাকে ফের জেরা, শুনানি ১৫ জুন

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যায়ে এসে তদন্ত কর্মকর্তাকে নতুন করে জেরা করার সুযোগ পেয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2017, 09:49 AM
Updated : 8 June 2017, 09:57 AM

দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদকে বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা শুরুর পর আগামী ১৫ জুন এ মামলার শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখেছেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান।

জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের সঙ্গে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও শুনানি চলছে এ আদালতে। ১৫ জুন ওই মামলাও আদালতে উঠবে।

বিচারক গত ১ জুন এ দুই মামলায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ৮ জুন দিন ধার্য করে দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে আসেন।

কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থনের বদলে খালেদার আইনজীবীরা এদিন দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ছয় সাক্ষীকে নতুন করে জেরার আবেদন করেন।

খালেদার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জমিরউদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও সানাউল্লাহ মিয়া।

তাদের আবেদনের বিরোধিতায় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, “এগুলো হচ্ছে মামলা প্রলম্বিত করার অপকৌশল। এই মামলায় বিচার এড়ানোর জন্য এবং বিচারের রায় আন্দাজ করে এর দায় থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এসব চেষ্টা করা হচ্ছে।”

শুনানির পর বিচারক পাঁচ সাক্ষীকে পুনরায় জেরার আবেদন নাকচ করলেও তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদকে আবার জেরার অনুমতি দেন।

আদালতের নির্দেশে খালেদার আইনজীবীরা তাৎক্ষণিকভাবে জেরা শুরু করেন। পরে দিনের শুনানি শেষ করে বিচারক নতুন তারিখ ঠিক করে দেন।  

এতিমখানা ট্রাস্ট ও দাতব্য ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৮ ও ২০১০ সালে মামলা দুটি দায়ের করে দুদক।

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুই মামলাতেই বিএনপি নেত্রীর আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি কয়েক দফা পেছানো হয়। আসামিপক্ষের অনাস্থার কারণে কয়েক দফা বিচারকও বদল হয়।

খালেদার সর্বশেষ আবেদনে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ১৬ মে এ দুই মামলা ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত থেকে বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে আসে।

২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে দুর্নীতির মামলা করা হয়।

এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়উর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

মামলা হওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

এরই মধ্যে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় অন্য মামলাটি করে দুদক।

তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

এ মামলায় আসামির তালিকায় খালেদা জিয়া ছাড়া তার একান্ত রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএয়ের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানের নামও রয়েছে।