তুমি আর নমিনেশন পাচ্ছ না: বদিকে কাদের

চলাচলের অনুপযোগী সড়ক দেখে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাংসদ আব্দুর রহমান বদির উপর চটেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2017, 04:32 PM
Updated : 2 June 2017, 05:00 PM

শুক্রবার টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক দিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার সময় মন্ত্রী বলেন, “দুই দুইবার এমপি হইলা। কিন্তু এটুকু সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ঠিক করতে পারলা না। জনগণের এই ভোগান্তির জন্য তোমার শিক্ষা পাওয়া উচিত। তোমাকে আগামীবার নমিনেশন দেওয়া হবে না।”

২০০৮ সালে প্রথমবারের মত আওয়ামী লীগ টিকেটে এমপি হন বদি। এরপর ইয়াবা পাচারের হোতা হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় তার নাম এলেও তাতে ২০১৪ সালে তার দ্বিতীয় দফা মনোনয়ন আটকায়নি।

দুর্নীতির এক মামলায় গতবছর ক্ষমতাসীন দলের এই এমপিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত। ওই মামলা বর্তমানে হাই কোর্টে বিচারাধীন।  

বদির নির্বাচনী এলাকায় টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে ওবায়দুল কাদের ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেন।

তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি দল বৃহস্পতিবার বিকালে কক্সবাজারে আসেন। শুক্রবার তারা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যান।

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হোসেন চৌধুরী ও এ কে এম এনামুল হক শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা বীর বাহাদুর ও আখতারুজ্জামান এবং দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।  

তারা কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতি পাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

সেখানে এক সমাবেশে সেতুমন্ত্রী কাদের ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা এখানে ফুল নিতে আসিনি, ফটোসেশন করতেও আসিনি। আমরা এসেছি মানুষের বিপদে আর কষ্টে পাশে দাঁড়ানোর জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীবের আপনজন। তার নির্দেশেই আপনাদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।”

গত মঙ্গলবার ভোরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরা। উপকূলীয় ১৬ জেলার ২ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ এই ঝড়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য।

সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফরে থাকার কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, “তিনি বিদেশে গেছেন; কিন্তু তার মন পড়েছিল দেশের দুর্গত মানুষদের প্রতি। তার মন ছিল টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী, কুতুবদিয়াসহ কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার দুর্গত মানুষদের প্রতি।”

ক্ষতিগ্রস্ত একজন মানুষও যেন দুর্যোগের কারণে কষ্ট না পায়- সেই নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে জানান কাদের।

সমাবেশের পর আওয়ামী লীগ নেতারা চারটি দলে ভাগ হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করতে যান। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, আশেক উল্লাহ রফিক ও সাইমুম সরওয়ার কমলসহ অন্য নেতারাও তাদের সঙ্গে ছিলেন।  

ওবায়দুল কাদের ও মাহবুব-উল আলম হানিফের নেতৃত্বে একটি দল টেকনাফে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি দল কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে, আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল চকরিয়া, পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এবং অখতারুজ্জামান ও বীর বাহাদুরের নেতৃত্বে আরেকটি দল বান্দরবানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যায়।