রোড ম্যাপের আগে নির্বাচনকালীন সরকার: মোশাররফ

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি উপেক্ষা করে শুধু নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ কার্যকর হবে না বলে সতর্ক করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2017, 11:19 AM
Updated : 25 May 2017, 11:38 AM

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি রোডম্যাপ দিয়েছে। রোডম্যাপ কোথায় হয়, রাস্তা বানানো কোথায় হয়? সমতল ভূমি থাকলে রাস্তা বানানো সম্ভব হয়। আপনাকে (সিইসি) লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রথম তৈরি করতে হবে, সমান সুযোগ ও সমান্তরাল মাঠ তৈরি করতে হবে।

“তা না করে আপনি যতই রোডম্যাপ বানান না কেন সেই রাস্তা নির্মাণ সম্ভব হবে না। আমরা আগেই থেকে হুঁশিয়ার করতে চাই, রোডম্যাপে যতই সংস্কারের কথা বলেন, যতই রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে ভালো ভালো কথা বলেন, আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ একটি সরকারের অধীনেই। দলীয় সরকারের অধীনে প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ‘রোড ম্যাপ’ নিয়ে মঙ্গলবার সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, তারা আগামী বছরের শেষে নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত রয়েছেন। তার আগে এই বছর রাজনৈতিক দলগুলোসহ সবার সঙ্গে সংলাপ করবেন তারা। 

রমজানের পর দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘সহায়ক নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা’ দেবেন জানিয়ে মোশাররফ বলেন, “রোডম্যাপ ঠিক করুন, আমরা সহযোগিতা করবো।

“তার আগে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমাদের স্পষ্ট প্রস্তাব যে, নির্বাচনের লেভেল ফিল্ড তৈরি করার জন্য নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা এদেশে কায়েম করুন। সেই সরকারের অধীনেই একটি নির্বাচন হতে হবে।”

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ’৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ এর উদ্যোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দি খায়রুল কবির খোকনের মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশাররফ বলেন, প্রধান বিচারপতি বলছেন, এই সরকার নিম্ন আদালতকে কব্জা করে নিয়েছে, উচ্চতর আদালতকেও তারা কব্জা করতে চায়। এই কথা একটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

“মানুষের সর্বশেষ আশা-ভরসার স্থল হচ্ছে বিচারালয়। আজকে নিম্ন আদালত সরকার যা বলছেন তাই হচ্ছে। আবার সরকার উচ্চ আদালতকে আপনারা (সরকার) কব্জা করার চেষ্টা করছেন। এসব করে কোনো কাজ হবে না।”

সরকার ‘পুলিশনির্ভর’ হয়ে গেছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, “পুলিশ দিয়ে আমাদের সমাবেশ করতে বাধা দিচ্ছে। কিছুদিন আগে আমরা সারা দেশে যে কর্মীসভার কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম, পুলিশ আমাদের কর্মীসভা করতে দেয়নি।

“গতকাল কুমিল্লা উত্তরের সমাবেশ হওয়ার কথা ছিলো চান্দিনায়, পুলিশের মঞ্চ দখল করে সেই সমাবেশ করতে দেয়নি। এমনিভাবে বহু জায়গায় পুলিশের মাধ্যমে আমাদের সমাবেশকে বন্ধ করা হচ্ছে। আমাদের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পুলিশ তল্লাশির প্রতিবাদে সমাবেশ করতে চেয়েছি, সেটাও পুলিশ করতে দেয়নি।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল ও ছাত্র দলের আকরামুল হাসানসহ নেতারা বক্তব্য দেন।