আগে নির্বাচনকালীন সরকারের ফয়সালা চায় বিএনপি

একাদশ নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে নির্বাচনকালীন সরকারের ফয়সালা আগে চাইছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2017, 11:14 AM
Updated : 24 May 2017, 11:14 AM

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের ‘রোড ম্যাপ’ দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বুধবার এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই অবস্থানের জানান।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ‘রোড ম্যাপ’ নিয়ে মঙ্গলবার সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, তারা আগামী বছরের শেষে নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত রয়েছেন। তার আগে এই বছর রাজনৈতিক দলগুলোসহ সবার সঙ্গে সংলাপ করবেন তারা। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা সর্বশেষ কথা বলে দিতে চাই, আপনারা যত রোডম্যাপ দেন, আমাদের সাথে আলোচনা করতে চান, আমরা আলোচনা করতে রাজি আছি।

“কিন্তু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হলে নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। ওই নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা আগে করতে হবে।”

নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান অনুযায়ী ভোটের আয়োজন করতে হয়। আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করার পর এখন নির্বাচিত সরকারকে রেখেই নির্বাচন হবে।

এতে আপত্তির কারণ জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “শেখ হাসিনা বা এই সরকারের অধীনে ২০১৪ সালে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় নাই, এবারও সেটা হবে না- এটা আমাদের স্পষ্ট কথা।”

তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিল হওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। এখন ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ দাবি তুলেছে তারা।

রোজার পরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ রূপরেখা আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরবেন বলে জানান খন্দকার মোশাররফ।

সিইসির উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আপনি যতই আইন সংস্কার করেন না কেন, যতই ভালো ভালো কথা বলেন, প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন পরিচালিত হয় সরকারের কর্মকর্তাদের দিয়ে। জেলায় ডিসি-এসপি, উপজেলায় ইউএনও-ওসি দিয়ে।

“সরকার থাকবে আওয়ামী লীগের, আর এই কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ হবে- এটা কোনোদিন সম্ভব নয়। এটা আমাদের কথা নয়, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনাও (প্রধানমন্ত্রী) এই কথা বলেছেন, কেনো দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।”

দলের আপত্তির কথা জানিয়ে ইভিএম নিয়ে না এগোতেও ইসির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে জাগপা নেতা শফিউল আলম প্রধানের স্মরণসভায় বক্তব্যে

নির্বাচনে ভারতের সহযোগিতার আগ্রহের বিষয়েও প্রতিক্রিয়া জানান মোশাররফ।

তিনি বলেন, “ভারতের হাইকমিশনার বলেছেন, তারা আমাদের নির্বাচনে সহযোগিতা করবে। আমাদের প্রশ্ন কী ধরনের সাহায্য? তারা আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র, ভারতের সহযোগিতা আমরা চাই।

“কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে যেভাবে ভারতের সরকার, পররাষ্ট্রসচিব একটা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য সারা বিশ্বে ক্যাম্পিং করেছেন এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসার জন্য সহযোগিতা করেছেন। সেই ধরনের সহযোগিতা-সাহায্য আমরা চাই না।”

তবে বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার বিষয়ে ভারতের সহযোগিতায় আপত্তি না থাকার কথা জানান বিএনপি নেতা।

“ভারতে হাইকমিশনার যেটা বলেছেন, এই দেশে সকল দলের অংশগ্রহণে যাতে জনগণ সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে, তাতে ভারত সহযোগিতা করবেন, সাহায্য করবেন-এই প্রত্যাশা আমরা করি।”

আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে এই স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্ অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মূর্তজা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপের জেবেল রহমান গনি, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।