কী হবে নেত্রী আর আমি জানি: আশরাফ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, দলের জাতীয় কাউন্সিলে নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না সে বিষয়ে শুধু দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও তিনি জানেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2016, 05:34 PM
Updated : 22 Oct 2016, 02:09 AM

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের নতুন সাধারণ সম্পাদক ‘হচ্ছেন বলে’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে তার অনুসারীদের অভিনন্দন এবং ওই পদে সংবাদ মাধ্যমে ‘চমকের’ খবর আসার পর সৈয়দ আশরাফের এ বক্তব্য এলো।

সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকায় আসা বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ে শুক্রবার রাতে সোনারগাঁও হোটেলে যান সৈয়দ আশরাফ। দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে এ সময় তার কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে আশরাফ বলেন, “আসতেও পারে, কাউন্সিল ক্যান মেইক এনি ডিসিশন। তবে এটা আলোচনা, কানাঘুষা- এইটাই বলতে পারবেন, এর থেকে আর বেশি কিছু না।

“আমি জানি কী হবে, আমি আর সভানেত্রী ছাড়া কেউ জানে না হোয়াট উইল গোয়িং টু হ্যাপেন। আফটার দ্য থ্রিল, আপনারা জানবেন হোয়াট হ্যাপেন্ড।”

তবে এই কাউন্সিলে নেতৃত্বে খুব একটা পরিবর্তন আসছে না বলে সম্মেলনের আগের রাতে ইঙ্গিত দিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কাউন্সিলে খুব বেশি পরিবর্তন হয় না। এটা ইনক্রিমেন্টাল হয়। যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন বা অসুস্থ আছেন তাদের বাদ দিয়ে নতুন ইনডাক্ট করা হয়। প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়েই এই নতুন কমিটিটা করা হবে।”

শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দুদিনের কাউন্সিলে গঠিত হবে আগামী নেতৃত্ব।

কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের কথা শেখ হাসিনা বললেও দলের নেতারা এজন্য তার দিকেই তাকিয়ে আছেন।

এর মধ্যেই বর্তমান কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কয়েকজন সমর্থক ফেইসবুকে তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আগাম অভিনন্দন জানান।

ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কাদের ভাইর সঙ্গে কিছুক্ষণ আগে কথা বলেছি। উনি আমাকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী উনাকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।”

বুধবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের আগে শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদেরকে ডেকে নিয়েছিলেন বলে জানান ওই নেতা।

তবে ওবায়দুল কাদের বরাবরই নিজ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নাকচ করে বলে আসছেন, এই ধরনের খবরে ‘বিব্রত’ বোধ করছেন তিনি।

বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ আশরাফ এই পদে আসেন ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনার বন্দি হওয়া এবং প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার উল্টোযাত্রার মধ্যে।

ওই সময় বিরূপ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দলীয় সভানেত্রীর পূর্ণ আস্থা অর্জন করেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে আশরাফ।

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আশরাফকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে নির্বাচনের পরও একই দপ্তর পান তিনি।

সাত বছর গুরুত্বপূর্ণ ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার মধ্যে তার নিয়মিত সময় না দেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় ওঠে।

এর মধ্যেই গত বছর আকস্মিকভাবে আশরাফকে দপ্তরবিহীন করেন শেখ হাসিনা। তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড়ের মধ্যে এক সপ্তাহের মাথায় তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী করেন তিনি।