জঙ্গিরা অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে: ইনু

জঙ্গিরা বাংলাদেশের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, রাষ্ট্র, সমাজ ও সংস্কৃতি রক্ষায় প্রত্যেককে এদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2016, 03:23 PM
Updated : 23 July 2016, 03:26 PM

শনিবার আহমাদীয়া মুসলিম জামা’ত, বাংলাদেশের আয়োজনে ‘জঙ্গিবাদের উত্থান ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা একটা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। জঙ্গিরা ধর্মের মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং এই যুদ্ধ সম্পর্কে আমাদের সার্বিক সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার। এই যুদ্ধটা রাষ্ট্রের, সমাজের, ইসলাম ও সকল ধর্মের বিরুদ্ধে চাপানো হয়েছে। এ অন্যায় যুদ্ধ আমাদের তিন হাজার বছরের সংস্কৃতি, ৮০০ বছরের মুসলিম সমাজ আর সংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে ওঠা রাষ্ট্র মুছে ফেলে দিয়ে তাদের মনগড়া ব্যবস্থা গায়ের জোরে বাংলাদেশের বুকে চাপাতে চায়।

“এ যুদ্ধে আমাদের হারার কোনো জায়গা নেই, জিততেই হবে।”

দুই-একজন জঙ্গিকে পাকড়াও করে সমস্যার সমাধান হবে না মন্তব্য করে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, “যুদ্ধের সময় কেউ নিরপেক্ষ থাকতে পারেন না, পক্ষ নিতে হবে। ১৬ কোটি মানুষের কেউই নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। প্রত্যেককে এই অন্যায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে পক্ষ নিয়ে ওদের পরাজিত করতে হবে।”

জঙ্গিদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“এরা ’৭১ আর ’৭৫ এর খুনি, ২১ অগাস্টের খুনি, আগুন সন্ত্রাসী; আরেক দল বিদেশি, ইমাম, পীর, পুরোহিত হত্যাকারী। একাত্তরের গণহত্যাকারী আর এরা একই বংশোদ্ভূত। এরা ঐক্যবদ্ধ জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে, অর্থনীতিতে বিপর্যয় আনার চেষ্টা করে, ইতিহাস বিকৃতি করে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এদের উসকানি দাতা, নেতা-নেত্রী, পৃষ্ঠপোষকদের যুদ্ধের নিয়মে মোকাবেলা করতে হবে। সাপকে, সাপের ডিম নষ্ট করতে হবে, বাচ্চাকে মারতে হবে।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ করেন ইনু।

তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া যদি এই জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা না করত, তাহলে অনেক আগেই বাংলাদেশে জঙ্গিদের ধ্বংস করে দিতে পারতাম। কিন্তু আজকে কাজটা একটু সময় লাগছে। জঙ্গিদের উৎপাত বুঁদবুঁদের মতো এক সময় মিইয়ে যাবে।”

জঙ্গিবাদীদের দমন করতে চারটি কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন আহমাদীয় মুসলিম জামা’ত-এর মোবাল্লেগ ইনচার্জ মাওলানা আব্দুল আউয়াল।

এগুলো হলো- তাদের নেতা-কর্মীদের ওপর কড়া নজরদারি, তাদের অর্থের সব উৎস বন্ধ করা, অস্ত্রের সরবরাহ বন্ধ করা এবং তাদের ‘বিকৃত মতবাদ আর ইসলামের অপব্যাখ্যা’ মূল উৎস থেকে তুলে ধরে এদেরকে জনবিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।

“প্রথম তিনটি কাজ সরকার ও প্রশাসনের আর চতুর্থ কাজটি সমাজের,” বলেন তিনি।

রাজধানীর ব্রাক সেন্টার ইন-এ অনুষ্ঠানে আহমাদীয় মুসলিম জামা’তের আমির মোবাশ্বের রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ, গণজাগরণ মঞ্চের নেতা মারুফ রসুল, ফাদার তপন ডি’ রোজারিও, বৌদ্ধ ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় ভিক্ষু বক্তব্য রাখেন।