বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নিজামীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজের পর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আদালতের রায়ে নিজামীর ফাঁসি বহাল থাকায় জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।
“মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করা আমাদের নির্বাচনী মেনুফেস্টোতে ছিল। অনেকে এর বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু আমরা বিভিন্ন দেশে ঘুরে এটি তুলে ধরেছি যে, এর চেয়ে ভালো ও সুষ্ঠু আইন নেই।”
রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার ফলে একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের দণ্ড কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
নিয়ম অনুযায়ী একাত্তরের বদরপ্রধান নিজামী এখন কেবল নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারেন। এর নিষ্পত্তি হলেই সরকার দণ্ড কার্যকর করবে।
আওয়ামী লীগের আসন্ন ২০তম সম্মেলন প্রস্তুতির প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-কমিটির বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এইচ টি ইমাম বলেন, “রুয়ান্ডাসহ যেখানেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে, কোথাও দেখবেন না এমনটা।
“কিন্তু সিঙ্গেল বেঞ্চ, ফুল বেঞ্চের পর আমরা ওদের রিভিউ করারও সুযোগ দিয়েছি। এই রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট এটি প্রমাণ করেছে যে, তারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, “যারা একাত্তরে গণহত্যা করেছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা তাদের পুনরাবৃত্তি দেখেছি।
৯১-৯৬ এও তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছি। আর ২০০১-২০০৬ এ আমরা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দেখেছি। জেএমবি এর উৎপত্তি দেখেছি। ৫২৫ স্থানে এক সময়ে বোমা হামলা হয়েছে।”
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, "আইএসের মদদে, জামায়াতের সাহায্যে এসব হয়েছে। আর জামায়াতের সহযোগী বিএনপি।”
গুপ্তহত্যার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে এইচ টি ইমাম বলেন, “প্রকাশ্যে বলা ঠিক হবে না। তবে এটুকু বলছি যে, আইনশৃংখলা বাহিনী ৩৭টির বেশি গুপ্তহত্যার তদন্ত শেষ করে ফেলেছে। এখন চার্জশিটের অপেক্ষা।”
জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালত যা বলবে তাই হবে। তবে সংবিধানের সঙ্গে গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ায় তারা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন করতে পারেনি।”
মার্চের মধ্যে জামায়াত নিষিদ্ধ হবে বলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেছিলেন জানালে এইচ টি ইমাম বলেন, “আমাদের কেউই একথা বলেনি। এটি আদালতের এখতিয়ার।”