বিনা লড়াইয়ে নৌকায় পার আরও ২৫ জন

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2016, 03:03 PM
Updated : 7 April 2016, 04:03 PM

এর মাধ্যমে প্রথম ধাপের ৫৪ জন ও দ্বিতীয় ধাপের ৩৪ জনকে নিয়ে তিন ধাপে নৌকা প্রতীকে ১১৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন।

দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে এবার। তৃতীয় ধাপে ৬২০ ইউপিতে ২৩ এপ্রিল ভোট হবে সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে; চেয়ারম্যান পদে লড়াই হবে ৫৯৫ ইউপিতে। এ ধাপে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল বুধবার।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান তৃতীয় ধাপের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চূড়ান্ত তথ্য বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠান।

তিনি জানান, এ ধাপের লড়াইয়ে ১৪টি দলের প্রার্থী রয়েছেন দুই হাজার ৬৭২ জন; এরমধ্যে দলের স্বতন্ত্র এক হাজার ১৮৫ জন ও এক হাজার ৪৮৭ জন। নৌকা প্রতীকে প্রার্থী রয়েছে ৬২০ ইউপিতে, বিএনপির প্রার্থী রয়েছে ৫৩৯ ইউপিতে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এসব ইউপি ছাড়া আরও ৫৬ ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী নেই।

যে ২৫ ইউপিতে প্রতিদ্বন্দ্বী নেই আ. লীগের

কুমিল্লার আদর্শ উপজেলার দুর্গাপুর উত্তর, লাকসামের গোবিন্দপুর, কুষ্টিয়ার খোকসার জানিপুর, জয়ন্তীহাজারা, খোকসা, শিমুলিয়া, বেতবাড়িয়া, খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী, জামালপুরের ইসলামপুরের গোয়ালেরচর, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের জামাল, নারায়ণগঞ্জের আলেরটেক, বক্তাবলী, কাশিপুর, রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া, নোয়াখালীর চাটখিলের খিলপাড়া, মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের বৌলতলী, পাওনদিয়া, কুমারভোগ, মেদেনিমন্ডল, লৌহজং, রাজবাড়ির বালিয়াকার জংপল, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের চরবংশী উত্তর, চরমোহনা, শরীয়তপুরের বিনোদপুর ও চিতলিয়া।

দুই ধাপের ফল: আ. লীগ ১০০১, বিএনপি ১০৮

গত ২২ মার্চ প্রথম ধাপে ৭১২ ইউপি ও দ্বিতীয় ধাপে ৬৩৯ ইউপির ভোট হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ ১০০১ ইউপিতে ও বিএনপি ১০৮ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ২১৮ ইউপিতে।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, প্রথম ধাপে ৭৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ধাপে আওয়ামী লীগ ৫৪০টি (৪৮৬ ভোটে ও ৫৪ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), বিএনপি ৪৭টি, জাপা ৪টি, জেপি ৩টি, জাসদ ৩টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি ও ইসলামী আন্দোলন ১টি চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ১০৩টিতে।

দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। এতে আওয়ামী লীগ ৪৪৭টি (৪১৩ ভোটে ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩৪), বিএনপি ৬১টি, জাপা ৪টি ও জাসদ ২টি চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ১১৫টিতে।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারাবাহিকতার পাশাপাশি গোলযোগ-সহিংসতা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে থাকা ইসি বলছে, ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে।

গোলযোগ রোধে ইসিকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলছে ক্ষমতাসীন দল। বিএনপি এ ভোটকে প্রহসন বলে ইসির কঠোর সমালোচনা করছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদও কিছু এলাকায় গোলযোগের কারণে সামগ্রিক অর্জন ম্লান হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। আগামীতে আরও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।

এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ১৩ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার ও কোস্টগার্ড প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করবে ইসি।

আগামী ৭ মে চতুর্থ ধাপের ভোটের মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। ৪ জুনের মধ্যে আরও দুই ধাপে ভোট হবে।