স্বতন্ত্র রহিম সংসদের ওয়েবসাইটে আ. লীগের

ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনের সাংসদ রহিম উল্যাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে জিতে এমপি এলেও জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটে (ইংরেজি সংস্করণ)  তার দলীয় পরিচয় হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নাম রয়েছে গত দুই বছর ধরে।

মঈনুল হক চৌধুরীনাজমুল হক শামীম ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 02:35 PM
Updated : 7 Feb 2016, 07:55 PM

এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে রোববার যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সংশোধনী এনে রহিমকে স্বতন্ত্র (Independent) সাংসদ করা হয়।

তবে ওয়েবসাইটের প্রচ্ছদে পরিবর্তন এলেও রহিমের বিস্তারিত পরিচিতিতে এখনও আগের সেই গলদ রয়ে গেছে। রোববারও সংসদের ওয়েবসাইটে  তার দুই পরিচয় পাওয়া গেছে।

ওয়েবসাইটের ইংরেজি সংস্করণে সংসদীয় আসন ২৬৭ এর এ সদস্যের ব্যক্তিগত পরিচয়ে অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে Rahim Ullah, Hon'able Member of Parliament, Party- Bangladesh Awami League লেখা রয়েছে।

যদিও ওয়েবসাইটের বাংলা সংস্করণে  উভয় জায়গায় তার স্বতন্ত্র সাংসদ পরিচয় রয়েছে।

প্রায় ৩০ বছর ধরে সৌদি আরবে ব্যবসা করে আসা রহিম উল্যাহ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। সে সময় জেদ্দা আওয়ামী লীগের সভাপতি রহিমের পক্ষে দাঁড়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশ।

বিএনপিবিহীন ওই ভোটে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না; এইচএম এরশাদের প্রচার ও প্রকাশনা উপদেষ্টা রিন্টু আনোয়ারকে প্রার্থী করেছিল জাতীয় পার্টি।

নিজের নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পাশের ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম হাজারীরও সমর্থন ছিল ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রহিমের। তবে কয়েক মাস যেতে না যেতেই চিত্র পাল্টে যায়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম হাজারীর অনুসারীদের সঙ্গে রহিম উল্যাহ ও তার সমর্থক আওয়ামী লীগের একাংশের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।

দুই বছর আগে ফেনী শহরে ফুলগাজীর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক খুন হওয়ার পর ওই হত্যাকাণ্ডে নিজামের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলায় তাদের এই বিরোধ শুরু হয় বলে স্থানীয়রা জানান।

শনিবার সন্ধ্যায় সোনাগাজী উপজেলা সদরে রহিম উল্যাহর গাড়িবহরে হামলার পর তাদের এই বিরোধ নতুন করে আলোচনায় আসে।

“নিজাম হাজারী চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিরীহ মানুষকে অত্যাচার, নির্যাতন ও হত্যা করে ফেনীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। তার ক্যাডাররা আমাদের মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আজ আমার গাড়িবহরে হামলা করেছে,” বলেন রহিম।

রহিম উল্যাহ প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা হলেও দলীয় প্রার্থী হিসেবে ভোট না করায় তার ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ পরিচিতিকে ‘বড় ভুল’ আখ্যায়িত করে এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে।

ফেনী প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল করিম মজুমদার বলেন, “জাতীয় সংসদ সাংবিধানিকভাবে আইন তৈরির প্রতিষ্ঠান। এমন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সংসদ সদস্যদের দলীয় পরিচয় ভুল দেখানো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

“এটা দুর্ভাগ্যজনক, কলঙ্কজনক ও হতাশার চিত্র।”

দ্রুত এই ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে সাংসদ রহিম উল্যাহ বলেছেন, “আমি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। তবে আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।

“সংসদের ওয়েবসাইটে দলীয় পরিচয় কী দেওয়া আছে তা আমি অবগত নই। যদি ভুল পরিচয় দেওয়া থাকে তাহলে তা শুদ্ধ করে দেওয়া উচিৎ।”