পৌর ভোট: জোটের বৈঠকের পরও নিশ্চুপ বিএনপি

জোট নেতাদের সঙ্গে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বৈঠক করলেও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2015, 06:18 PM
Updated : 26 Nov 2015, 06:24 PM

বুধবার দলীয় নেতাদের সঙ্গে খালেদার বৈঠকের পর যেমন বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরও একই কথা বলেছেন বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।

তবে নাগাদ সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি, কি যাচ্ছি না, তা শিগগিরই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।”

৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রেখে ইসি ২৩৬ পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল দিয়েছে। এই নির্বাচনে অংশ নিতে হলে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিএনপিকে, কারণ সেদিনই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।

মনোয়নপত্র দাখিলের এই সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন যাওয়ার বিষয়টি জানানো হবে, বলেন বিএনপির মুখপাত্র।

তফসিল ঘোষণার পর বুধবার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠকে ডাকেন খালেদা। তাদের সঙ্গে আলোচনার একদিন পর নিজের গুলশানের কার্যালয়ে ডাকেন ২০ দলীয় জোটের নেতাদের।

রিপন বলেন, “পৌর নির্বাচনে যাওয়া, না যাওয়ার বিষয়ে গতকালের মতো আজকে জোট নেতৃবৃন্দ বিএনপির চেয়ারপারসনের ওপর দায়িত্ব প্রদান করেছেন। তার উপর আস্থা প্রকাশ করেছেন।”

এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন হবে। অর্থাৎ বিএনপি ভোটে গেলে তার দলের মেয়র প্রার্থীরা লড়বেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।

তবে বিধিমালা অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপির জোট শরিকরা ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না। যার যার প্রতীক নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।  

জোটগতভাবে প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ না থাকার কথা জানানো হলে রিপন বলেন, “এই নির্বাচনটি দলীয় প্রতীক অনুযায়ী হবে। এটা জোটগতভাবে বা দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে কি না, তা আমরা জানি না।

“আইন অনুযায়ী ক্ষমতাসীন জোটের শরিকরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবেন কি না অথবা আমাদের জোটের শরিকরা যদি কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, আমরা তাদের ধানের শীষ প্রতীক দিতে পারব কি না – এসব বিষয় আইনগত ব্যাখ্যার দাবি রাখে। এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজ্ঞরা বিশ্লেষণ করছেন।”

খালেদার সঙ্গে এই বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) এসএমএম আলম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার চৌধুরী বুলবুল, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জমিয়তে উলামে ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডিএল’র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, কল্যাণ পার্টির এমএম আমিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনও ছিলেন বৈঠকে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি শরিকদের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা চাওয়া হয়েছে। এটা শনিবারের আগেই বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের দাবিতে বিএনপি সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও আগে-পরে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনেই অংশ নিয়েছে।

‘ব্যর্থ’ আন্দোলনের পর সর্বশেষ গত এপ্রিলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলেও ভোটগ্রহণের মাঝপথে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে তা বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীরা।