চোখে ইবোলা থেকে যেতে পারে কয়েকমাস

রোগী ইবোলামুক্ত হওয়ার পরও তার চোখে মাসের পর মাস থেকে যেতে পারে ইবোলা ভাইরাস, বলছেন গবেষকরা।

>>আইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2015, 03:53 PM
Updated : 10 May 2015, 03:53 PM

যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে চোখে ইবোলা ভাইরাস সনাক্তের একটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, এক রোগীর রক্ত ইবোলামুক্ত হওয়ার পরও তার চোখের মনি ও কর্নিয়ার মাঝের তরল পদার্থে ভাইরাসটি থেকে যায় ১০ সপ্তাহ ধরে। অবশ্য তারপরও ওই রোগীর অশ্রু, কর্নিয়ার পাতলা আচ্ছাদন, চোখের উপরিভাগ এমনকি চোখের পাতার নমুনা পরীক্ষা করে কোথাও এ ভাইরাসের উপস্থিতি পাননি গবেষকরা। আর চোখের এ সংক্রমণ অন্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ না বলেও মনে করছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম জানায়, চোখে ইবোলা সনাক্ত হওয়া ওই রোগীর নাম আয়ান ক্রোজিয়ার। বয়স ৪৩ বছর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ডাক্তার হিসাবে সিয়েরা লিওনে ইবোলা আক্রান্তদের চিকিৎসা করার সময় গত বছর সেপ্টেম্বরে তার দেহে এ ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ৪০ দিনের নিবিড় পরিচর্যায় সারিয়ে তোলা হয়।

আয়ানের রক্ত এবং মূত্র পরীক্ষা করে ইবোলা ভাইরাসের উপস্থিতি নেই দেখে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু এর পরপরই তার পিঠে ব্যাথাসহ ফের কিছু নতুন উপসর্গ দেখা দেয়।

দু’মাস পর বাম চোখে জ্বালাপোড়া নিয়ে আবার হাসপাতালে ফেরত যান আয়ান। তিনি চোখে কম দেখছিলেন এবং চোখের রঙও বদলে গিয়েছিল। এরপর চিকিৎসকরা তার চোখের তরল পদার্থ পরীক্ষা করে ইবোলা ভাইরাস পান।

গবেষকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, শরীরের অন্য কোনো স্থানে ইবোলা ভাইরাস দীর্ঘসময় ধরে থেকে যেতে পারে কি না, তা নিয়েও গবেষণার প্রয়োজন আছে।

ইবোলা আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করে তাতে ভাইরাসের উপস্থিতি না পেলে সংশ্লিষ্ট রোগীকে ছেড়ে দেয়া হলেও এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেহের অন্য কোনোখানেও ইবোলা ভাইরাস থেকে যেতে পারে।

ইমোরি ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন এর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখে থেকে যেতে পারে ইবোলা।  আগের কয়েকটি গবেষণাতেও দেখা গেছে, ইবোলা ভাইরাস প্রায়শ চোখেই থেকে যায়। আর পরবর্তী সময়ে তা ক্ষতির কারণও হয়ে উঠতে পারে। রোগী হারাতে পারে দৃষ্টিশক্তি।

আর সে কারণেই ইবোলামুক্ত হওয়ার পর চোখের সমস্যার দিকে নজর রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ইমোরি চক্ষু কেন্দ্রের গবেষকরা।