‘ফেভিপিপ্রান্ট’ নামের এ ওষুধটি প্রায় ২০ বছরের মধ্যে প্রথম এমন এক ধরনের বড়ি যেটি মারাত্মক হাঁপানি রোগ উল্লেখযোগ্যভাবে উপশম করতে পারে। বড়িটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারে এমন সাফল্যেরই ইঙ্গিত পেয়েছেন গবেষকরা।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে একটি গবেষণায় লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ৬০ জন হাঁপানি রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেছেন তারা স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়মিত পরিচর্যা পাওয়ার পরও তীব্র হাঁপানিতে ভুগছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, এক্ষেত্রে 'ফেভিপিপ্রান্ট’ বড়ি অন্যান্য স্টেরয়েড ইনহেলারের চেয়ে ফুসফুস ও শ্বাসনালীর প্রদাহ অনেকখানি কমাবে।
যুক্তরাজ্যে ৫০ লাখের বেশি মানুষ হাঁপানি রোগে ভোগে। এটি দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুস ও শ্বাসনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে । যার কারণে কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
অধিকাংশ রোগী ইনহেলার ব্যবহার করে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করলেও অনেক ক্ষেত্রে আরও গভীর প্রাণঘাতী উপসর্গ থেকে যায়।
‘চ্যারিটি অ্যাজমা ইউকে' র হিসাবমতে, ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যের ১,২১৬ মানুষ হাঁপানি রোগে মারা গেছে।
গবেষকরা দেখেছেন, রোগীরা 'ফেভিপিপ্রান্ট’ বড়ি ব্যবহারের পর তাদের শ্লেষ্মা এবং শ্বাসনালীতে হাঁপানির মূল লক্ষণ যে রক্তকণিকা তা কমেছে।
১৬ বছর ধরে হাঁপানিতে ভোগা গে স্টক্স জানান, ''আগের চাইতে এখন আমার অনেক ভালো বোধ হচ্ছে। শাঁ শাঁ করে নিঃশ্বাস ফেলা কমে গেছে এবং সারা বছরে প্রথমবারের জন্য আমি সত্যিই, সত্যিই সুস্থবোধ করছি।''
৫৪ বছর বয়সী স্টক্স জানান, একবার তিনি ওষুধটি সেবন বন্ধ করলেই তার হাঁপানি আবার বেড়ে যায়। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, বড়িটির ব্যবহার এখনও একটি প্রাথমিক পর্যায়ে, দীর্ঘমেয়াদে এ পিল দৈনন্দিন জীবনে রোগীদের জন্য কতটা উপকারী হবে তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
ওদিকে, 'এজমা ইউকে’র ডাক্তার সামান্থা ওয়াকার বলেন, ''হাঁপানি প্রতিকারে গবেষণাটি সম্ভাবনাময় এবং আমরা সতর্ক আশাবাদ নিয়ে এগুচ্ছি।''
লন্ডনের রয়্যাল ব্রমটন হাসপাতালের ফুসফুস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক স্টিফেন ডরহম বলেন, "অধ্যাপক ক্রিস ব্রাইটলিং এর গবেষণা দলের গবেষণা থেকে আমরা অনেকটাই প্রমাণ পেয়েছি যে, 'ফেভিপিপ্রান্ট’ বড়ি তীব্র হাঁপানি রোগীদের প্রদাহ কমাতে, ফুসফুসের কার্যক্রম বাড়াতে এবং হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট কার্যকর।''