ডায়াবেটিস মহামারি ঠেকাতে হবে: ডাব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসকে সামনে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, শনাক্ত ও দূরীকরণে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2016, 02:37 PM
Updated : 6 April 2016, 03:28 PM

প্রতি বছরের মতো আগামী বৃহস্পতিবার পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, যাতে এবারের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে ডায়াবেটিসকে।

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ডায়াবেটিস ‘মহামারি’ আকার ধারণ করেছে জানিয়ে আগামী বছরগুলোতে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক কার্যালয়।

ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. পুনাম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, “ডায়াবেটিস কদাচিৎ শিরোনামে আসে; ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দেশগুলোর সরকার এর উপর নজর না দিলে সেটি ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সপ্তম প্রাণঘাতী বিষয়ে পরিণত হবে। ”

১৯৪৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দিন ৭ এপ্রিলকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে পালন করা হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় প্রতিবছর দিবসটির একটি প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপনে সচেতনতামূলক প্রচার, সেমিনার ও আলোচনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ।

ডব্লিউএইচও বলছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ডায়াবেটিস সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত ৩৭ লাখ রোগীর প্রতি চারজনে একজনের মৃত্যুর কারণে এটি সুনির্দিষ্টভাবেই ‌‘উদ্বেগজনক’।

ডায়াবেটিসের বিস্তার যক্ষ্মাসহ বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করছে।

ডা. পুনাম সিং বলেন, “বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত প্রায় ৯৬ মিলিয়ন মানুষের অর্ধেকই জানে না তারা রোগটি বহন করছে। যদি ডায়াবেটিসের বিস্তার বাড়তে থাকে তাহলে তা ব্যক্তিগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংকট তৈরি করবে।”

বসে বসে কাজ করার অভ্যস্ততার সঙ্গে চিনি, লবণ ও চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ এ অঞ্চলে ডায়াবেটিসকে মহামারির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

ডায়াবেটিস রোগের প্রায় ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়াবেটিস দেখা যায়, যা অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণেই হয়ে থাকে।

এই ধরনের ডায়াবেটিস প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা করে তা প্রতিরোধ করা যায়। যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ডায়াবেটিস হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অন্ধত্ব ও নার্ভের ক্ষতিসহ শরীরের বিভিন্ন প্রধান প্রধান অঙ্গহানি ঘটাতে পারে।

ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, “ডায়াবেটিস প্রতিরোধে আলাদা আলাদা পদক্ষেপ আমরা নিতে পারি এবং অবশ্যই নিতে হবে। পরিমিত খাবার খাওয়া এবং চিনিসমৃদ্ধ পানীয় এড়িয়ে চলা হতে এক্ষেত্রে ভালো শুরু।”

শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগানের বাইরে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া পরিহার করার কথাও বলেন তিনি।

ওজন নিয়ন্ত্রণে প্রাপ্তবয়স্কের জন্য সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন নিয়মিত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার ওপর জোর দেন ডা.পুনাম সিং।

সরকারগুলো চিনিযুক্ত পানীয়ের ওপর করের পরিমাণ এবং স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারে বিনিয়োগ বাড়ালে বাস্তবক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের এই পরিচালক।