‘বিস্ফোরকের মত’ ছড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস

মশাবাহিত জিকা ভাইরাস এখন আমেরিকাজুড়ে ‘বিস্ফোরকের মত’ ছড়িয়ে পড়ছে এবং এ ভাইরাসজনিত রোগ নিয়ে ‘চরম উদ্বেগ’ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2016, 02:47 PM
Updated : 28 Jan 2016, 03:13 PM

৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ এ ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি মোকাবেলায় ডব্লিউএইচও এরই মধ্যে একটি জরুরি টিম গঠন করেছে।

ডব্লিওএইচও’র মহাপরিচালক ড. মার্গারেট চ্যান বলেছেন, জিকা ভাইরাস দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে এবং এর প্রভাবটাও অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।

২৩ টি দেশসহ আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলে জিকা এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে জানিয়ে চ্যান বলেন, “এর বিরুদ্ধে দ্রুতই কিছু করা প্রয়োজন।”

জিকা ভাইরাসের কারণে নবজাতক শিশুর মধ্যে গুরুতর জন্মগত ত্রুটির কারণেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বেশি।

আমেরিকায় ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক কার্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ মার্কোস এসপাইনাল এ ভাইরাস জনিত রোগে ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে এর কোনও সময়সীমা উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, জিকা ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা টিকা এখনো নেই। এ ভাইরাস আক্রান্তদের  বেশিরভাগেরই কোনও লক্ষণ প্রকাশ না পাওয়ায় রোগ সনাক্ত করাও কঠিন।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতেই জরুরি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, বলেছেন  ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক চ্যান।

রোগ-বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত এ জরুরি কমিটি ভারাইসটি নিয়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়া ছাড়াও ভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলোতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করবে।

জিকা ভাইরাস মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যকর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে ১ ফেব্রুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জরুরি কমিটির বৈঠকও ডেকেছেন চ্যান।

গত বছর মে মাস থেকে ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। তার পর থেকে দেশটিতে অপরিণত বা ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্ম নেওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় শিশুদের এ অবস্থাকে বলা হয়‘মাইক্রোসেফালি’। এতে আক্রান্ত শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন সম্পূর্ণরূপে হয় না। ফলে ওই শিশুরা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হতে পারে,শারীরিক বৃদ্ধি বিলম্বিত হতে পারে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মাঝারি মাত্রার জ্বর, চোখে প্রদাহ ও মাথাব্যাথা হয়। গর্ভবতী নারী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এডিস মশা জিকা ভাইরাস বিস্তারের জন্য দায়ী। এই মশা ডেঙ্গু রোগের ভাইরাসও বহন করে।