শনিবার রাত ৩টার দিকে লাগা আগুনে চালপট্টির তিনটি রাইস মিল, একটি আড়ৎসহ ১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চাক্তাই খাল ঘেঁষে অবস্থিত চালপট্টির প্রায় দশ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে আগুনে পোড়া দোকানের ধ্বংসাবশেষ। পোড়া খুঁটি ও টিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
পুড়ে যাওয়া দোকানে ব্যবসায়ীরা তাদের জিনিস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। পুড়ে যাওয়া কোনো কোনো দোকানের চাল থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লামারবাজার, চন্দনপুরা, নন্দনকানন ও আগ্রাবাদ স্টেশনের ১০টি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে। সকাল সোয়া ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভাতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায়।
এত বড় ক্ষতির জন্য ফায়ার সার্ভিসকে দোষারোপ করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি ফায়ার সার্ভিস ঠিক সময়ে আগুন নেভানোর কাজ করলে এত ক্ষয়ক্ষতি হত না।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বলেন, “চালপট্টি থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে ফায়ার স্টেশন। খবর দেওয়ার পর তারা যথাসময়ে আসলেও কাজ শুরু করতে পারেনি।
তিনি বলেন, তিনটি রাইস মিল ও একটি আড়তে মোট ১৭ হাজার ৩০০ বস্তা (প্রতিটি ৫০ কেজি) পুড়ে গেছে। এছাড়াও ১২টি মুদি দোকানে পুড়ে গেছে কোটি টাকার পণ্য।
“সবমিলিয়ে আমাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দশ কোটি টাকা। যথাসময়ে আগুন নেভাতে পারলে এত বড় ক্ষতি এড়ানো যেত,” বলেন ব্যবসায়ী নেতা ওমর আজম।
পুড়ে যাওয়া চালের আড়ত ‘হারুন অ্যান্ড ব্রাদার্স’র ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, “আগুনের খবর পাই রাত ৪টার দিকে। এসে দেখি কিছু সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”
প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “ফায়ার সার্ভিস দ্রুত আগুন নেভাতে পারলে কিছু হয়ত বাঁচানো যেত।”
তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে সকালে ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসের সহকারী পরিচালক পরিমল কুণ্ড বলেছিলেন, ঘটনাস্থলে বিদ্যুৎ লাইন সচল থাকায় তাদের কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, “যখন আগুন লেগেছিল, তখন সেখানে প্রত্যেকটি বিদ্যুৎ লাইন সচল ছিল, প্রতিটি পোলে স্পার্ক হচ্ছিল। ওই অবস্থায় সেখানে পানি ছিটানো হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত।
“আগুন নেভানোর সময় ফায়ারম্যানদের নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। সে কারণে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে কাজ শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে।”