শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়; যদিও এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতি শুরুর কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন তারা।
কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর কমপক্ষে পাঁচটি ঘাটে পণ্য ওঠা-নামার বন্ধ হয়ে গেছে।
লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন বলেন, গত বছরের ৫ অক্টোবর শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরির গেজেট ঘোষণা করে সরকার। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর নতুন বেতন ঘোষণা করা হয়।
“১৫ ডিসেম্বর থেকে সব মালিকের ওই হারে বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা ছিল। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর কথা বলে তারা জাহাজের ভাড়াও বাড়িয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সব জাহাজ মালিক এই বেতন-ভাতা দিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি।”
১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও তার আগেই কর্মসূচি শুরুর বিষয়ে শাহাদাত বলেন, “আসলে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
“আমরা বলেছিলাম, দাবি মানা না হলে ১০ ফেব্রুয়ারির পর থেকে অর্থাৎ ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতি শুরু হবে। যেসব জাহাজ মালিক বর্ধিত বেতন-ভাতা দিচ্ছেন ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের তালিকা হবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই সব জাহাজ সাদা পতাকা উড়িয়ে চলবে। বাকি জাহাজে কর্মবিরতি চলমান থাকবে।”
এদিকে লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের আরেকাংশের দাবি কর্মবিরতির প্রভাব চলাচলে তেমন পড়ছে না।
এই অংশের সাধারণ সম্পাদক নবী আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরাই ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বর্ধিত বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি দিয়েছিলাম। তা না হলে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতি করার কথা ছিল।
“কিন্তু দাবির মুখে গতরাতে জাহাজ মালিকরা এক সপ্তাহের মধ্যে বর্ধিত বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে তখন কর্মসূচি পালন করব।”
শ্রমিকদের একাংশকে বিভ্রান্ত করে সৈয়দ শাহাদাত নেতৃত্বাধীন অংশ কর্মবিরতি শুরু করেছে বলে দাবি নবী আলমের।
চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে চলাচলকারী প্রায় দেড় হাজার লাইটার জাহাজ আছে। এসব জাহাজের মালিক প্রায় আটশজন।
এগুলোসহ সারাদেশের সব নৌরুট মিলিয়ে প্রায় ছয় হাজার লাইটার জাহাজ চলাচল করে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে থাকা মাদার ভেসেল (বড় আকারের জাহাজ), কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাট এবং বিভিন্ন জেটি থেকে লাইটার জাহাজে করে পণ্য পরিবহন করা হয়।
নবী আলম বলেন, “বহির্নোঙরে লাইটারে কাজ চলছে। সকালেও দেশের অন্যান্যা এলাকার উদ্দেশে লাইটার ছেড়ে গেছে।”
লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখন পর্যন্ত কর্ণফুলীর কয়টি ঘাটে কাজ বন্ধ হয়েছে তা দেখতে সেখানে লোক গেছে।
“দাবির বিষয়টি নিরসন করতে পারবেন জাহাজ মালিকরা। তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও এখনও কাউকে পাওয়া যায়নি।”
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের নেতারা জাহাজ মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।