মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এক জনসভায় তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের আসলাম চৌধুরী সরকার উৎখাত করতে চেয়েছিল ইসরায়েলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে হাত মিলিয়ে।
“১৪ দলের সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কে ক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না। ১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত হরতাল-অবরোধ-নাশকতা করে ব্যর্থ হয়। অকৃতকার্য হয়ে খালেদা জিয়া ইসরায়েলের সাথে হাত মিলিয়েছে।”
‘সরকার উৎখাতের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, গুপ্তহত্যা, নাশকতা ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে’ জনমত সৃষ্টির লক্ষে এ জনসভার আয়োজন করে ১৪ দলের চট্টগ্রাম ইউনিট।
সম্প্রতি ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পাটির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর একটি ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এর মধ্যে গত ১৫ মে তাকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হলে পরদিন সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
সরকারে তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছিলেন।
আসলাম চৌধুরী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পরামর্শেই ইসরায়েলি ওই রাজনীতিবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে চট্টগ্রামের জনসভায় দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম।
“যারা লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যারা মুসলিম জাহানকে ধ্বংস করতে চায়- খালেদা জিয়ার পরামর্শে আসলাম চৌধুরী তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে।
যে কোনো মূল্যে বিএনপি-জামায়াতের ‘চক্রান্ত’ বন্ধ করা হবে জানিয়ে নাসিম বলেন, “বিএনপি-জামায়াত বসে নেই। তারা জঙ্গি উত্থান ঘটিয়েছিল, আমরা উৎখাত করেছি। মোসাদকে নিয়ে তারা আবার চক্রান্ত শুরু করেছে।”
সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার বিষয়ে জাসদ’র কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, “চিনে না, জানে না- চৌদ্দ গোষ্ঠীর কোনো সম্পর্ক নেই, এমন লোককে কোপানো শুরু করছে।
“টাঙ্গাইলের দর্জির দিনে উপার্জন ২৫ টাকা। তাকে খুন করল। নাইক্ষ্যংছড়ির ভিক্ষু মনে হয় একটা পিপড়াও মারে না। তাকে কোপায়। কেন? কি কারণে?”
বাদল বলেন, “যারা কোপায় তাদের নেতাদের চ্যালেঞ্জ দিতে চাই। খোদার কোরআনে-কিতাবে কোন হাদিসে কোন সুরায় এরকম কোপানোর কথা আছে, বলতে হবে। দেখাতে পারলে সব ছেড়ে দেব।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশ ‘উঠে আসছে’ তাই ‘অগ্রযাত্রা’ ঠেকাতে ‘কোপানো’ শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাদল।
নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কাস পার্টির কামরুল আহসান ও ন্যাপ নেতা এনামুল হক বক্তব্য রাখেন।
জনসভাটি নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে হওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার থেকে দেশে আসতে পারেননি বলে জানানো হয়।