চট্টগ্রামের জ্বালানি সমস্যার সমাধান দুই বছরে: প্রতিমন্ত্রী

দুই বছরের মধ্যে চট্টগ্রামের জ্বালানি সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2015, 04:16 PM
Updated : 10 Oct 2015, 04:16 PM

শনিবার বিদ্যুৎ ভবনে এক গোল টেবিল আলোচনায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রাম নিয়ে সরকারের বিশাল কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। সেটা বাস্তবায়নে সময় কিছুটা লাগবে।”

‘চট্টগ্রামের শিল্পায়ন: জ্বালানির প্রাপ্যতা’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে রাজধানীতে কর্মরত চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘চিটাগাং জার্নালিস্টস ফোরাম ঢাকা (সিজেএফডি)’।

গ্যাসের সংকট কমিয়ে আনতে সরকারের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, “আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে এলপিজির ব্যবহার বাড়িয়ে এবং সিএনজিতে গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে সেই গ্যাস শিল্প কারখানায় সরবরাহ করা হবে। এতে শিল্পে গ্যাসের সংকট অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়া আমরা এলএনজিও নিয়ে আসছি।”

তবে গ্যাংসের সংকট কাটাতে সরকারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চান আলোচকরা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, “এলএনজি আসতে সময় লাগবে। এটা কবে আসবে তা সুনির্দিষ্ট করে সরকারকে বলতে হবে।

“গ্যাসের সংকট হলে সামনে আছে কয়লা। আরেকটি হল ফার্নেস তেল। ভারতে তুষ দিয়ে বহু বয়লার চালানো হচ্ছে। দরকার হলে আমাদেরও সেটা করতে হবে। অর্থ্যাৎ যখন যে জ্বালানি ব্যবহার আমাদের জন্য সুবিধাজনক হবে, তখন সেটা ব্যবহার করতে হবে।”

তিনি শিল্প কারখানায় বয়লারের দক্ষতা বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলেন।

কনজ্যুমারস অ্যাস্যোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সামসুল আলম আগে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বাসার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানান।

তার বক্তব্যের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এটা ভাল প্রস্তাব। আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, “ব্যবসায়ের উন্নয়নে চট্টগ্রামের সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বন্দর সুবিধা আর ভারী শিল্পের জন্য অনুকূল হওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

“কিন্তু সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্র বন্ধ এবং সেমুতাং গ্যাসক্ষেত্র থেকে কাঙ্ক্ষিত গ্যাস না পাওয়ায় চট্টগ্রামভিত্তিক গ্যাস উৎপাদন অনেকটা কমে গেছে। অন্যান্য গ্যাসক্ষেত্র থেকে পর্যাপ্ত গ্যাসের চাপও পাওয়া যায় না। ফলে চট্টগ্রামে গ্যাসের সরবরাহ কমেছে।”

মূল প্রবন্ধে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজরুম এডিটর মামুন আবদুল্লাহ গ্যাস ও বিদ্যুতে দুই দশক ধরে চট্টগ্রামের বৈষম্যের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা সাড়ে ৪শ মিলিয়ন ঘনফুট। সেখানে সরবরাহ করা হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা পড়ে আছে আরও প্রায় ১০ কোটি ঘনফুটের সমপরিমাণ আবেদন।

“ফলে সক্ষমতার প্রায় অর্ধেক উৎপাদন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ইস্পাত, রড, সিমেন্ট উৎপাদনকারী চট্টগ্রামের ভারি শিল্প কারখানাগুলোকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিল্পমালিকরা ক্ষতি পোষাতে বেছে নিচ্ছেন বিকল্প জ্বালানি। যার উচ্চমূল্য প্রতিযোগিতার বাজারে পিছিয়ে দিচ্ছে বন্দরনগরীর ব্যবসায়ীদের।”

চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহের চিত্র গ্যাসের চেয়েও খারাপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দৈনিক ৮০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হচ্ছে ছয়শ মেগাওয়াট।”