ওয়ানডে সিরিজ জিম্বাবুয়ের

ভুসিমুজি সিবান্দার অপরাজিত শতকে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে ৩ ম্যাচের সিরিজে জিতেছে জিম্বাবুয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2013, 01:03 AM
Updated : 8 May 2013, 09:08 AM

জিম্বাবুয়ের কাছে এটি বাংলাদেশের টানা দ্বিতীয় সিরিজ হার। এর আগে ২০১১ সালে সর্বশেষ সফরে ৩-২ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল তারা।

বুধবার বুলাওয়ায়োর কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৪৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৭ ওভার ১ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।

শিঙ্গিরাই মাসাকাদজার বদলে দলে ফেরা বাঁহাতি পেসার ব্রায়ান ভিটোরির তোপে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। চতুর্থ ওভারের প্রথম দুই বলে মোহাম্মদ আশরাফুল ও জহুরুল ইসলামকে বিদায় করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান তিনি।

লাফিয়ে উঠা বলে গালিতে ক্যাচ দেন আশরাফুল (৫)। মমিনুল হকের বদলে দলে ফেরা জহুরুল প্রথম বলেই বোল্ড হন।

তৃতীয় উইকেটে তামিম ইকবালের সঙ্গে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ৬২ রানের জুটি প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয়। কিন্তু ৭ রানের ব্যবধানে তাদের বিদায় দলকে আবার চাপে ফেলে।

প্রসপার উৎসেয়ার বলে ডিপ মিডউইকেটে টেন্ডাই চাতারার হাতে ধরা পড়েন ভিটোরির হ্যাটট্রিক রুখে দেয়া মুশফিক (৩২)। ১০ রানে এল্টন চিগুম্বুরার হাতে জীবন পাওয়া তামিম (৩২) ব্রেন্ডন টেইলের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন।

আস্থার সঙ্গে শুরু করলেও বেশিক্ষণ টেকেননি সাকিব আল হাসান। শন উইলিয়ামসের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ভুসিমুজি সিবান্দার ক্যাচে পরিণত হন সাকিব (১৮)।

১১০ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপদে পড়া বাংলাদেশকে কক্ষপথে ফেরান নাসির হেসেন ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ষষ্ঠ উইকেটে ৯৪ বলে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তারা।

কাইল জার্ভিসের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে টেইলের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় নাসিরের ৬৩ রানের দারুণ ইনিংসটি। তার ৭৩ বলের ইনিংসে ৪টি চার।

নাসিরের বিদায়ের পর প্রায় একাই খেলতে হয়েছে সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে। জিয়াউর রহমান (৫), আব্দুর রাজ্জাক (৪) ও শফিউল ইসলামকে (১) সঙ্গে নিয়ে দলের রান আড়াইশর কাছাকাছি নিয়ে যান তিনি।

শেষ পর্যন্ত ৭৫ রানে অপরাজিত থাকা মাহমুদুল্লাহর ৭৪ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছক্কা। জার্ভিসের করা ৪৯তম তম ওভারে ছক্কা দুটি হাঁকান তিনি। ওয়ানডেতে এটাই মাহমুদুল্লাহর সর্বোচ্চ রান।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে জার্ভিস, ভিটোরি ও চাতারা দুটি করে উইকেট নেন।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার সঙ্গে সিবান্দার ৭৯ রানের জুটি জিম্ববুয়েকে দারুণ সূচনা এনে দেয়। রবিউল ইসলামের বলে হ্যামিল্টন (৪১) মুশফিকের হাতে ধরা পড়লে ভাঙ্গে ১৪ ওভার ১ বল স্থায়ী জুটি।

দ্বিতীয় উইকেটে সিকান্দর রাজার সঙ্গে ৫৬ রানের আরেকটি ভালো জুটি দলকে উপহার দেন সিবান্দা। জিয়ার বলে রাজা (৩৭) নাসিরের ক্যাচে পরিণত হলে দ্বিতীয় সাফল্য পায় বাংলাদেশ।

এরপর মাহমুদুল্লাহ টেইলরকে (২) দ্রুত ফিরিয়ে দিলে খেলায় ফিরে অতিথিরা। কিন্তু উইলিয়ামসের সঙ্গে সিবান্দার ১০৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি স্বাগতিকদের সহজ জয় এনে দেয়।

জহুরুলের হাতে একবার জীবন পাওয়া উইলিয়ামস অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে। তার ৪৬ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা।

ম্যাচ ও সিরিজের সেরা খেলোয়াড় সিবান্দা অপরাজিত থাকেন ১০৩ রানে। তার ১৩৫ বলের ইনিংসে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা। ৯ রানে মাহমুদুল্লাহ ও ৯১ রানে নাসিরের হাতে জীবন পান তিনি। এটি তার দ্বিতীয় শতক।

বাংলাদেশের পক্ষে জিয়া, মাহমুদুল্লাহ ও রবিউল একটি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৪৭/৯ (তামিম ৩২, আশরাফুল ৫, জহুরুল ০, মুশফিক ৩২, সাকিব ১৮, নাসির ৬৩, মাহমুদুল্লাহ ৭৫*, জিয়া ৫, রাজ্জাক ৪, শফিউল ১, ভিটোরি ২/৪৩, চাতারা ২/৫৯, জার্ভিস ২/৬৩, উইলিয়ামস ১/২৯, উৎসেয়া ১/৩৪)

জিম্বাবুয়ে: ৪৭ ওভার ১ বলে ২৫১/৩ (সিবান্দা ১০৩*, হ্যামিল্টন ৪১, রাজা ৩৭, টেইলর ২, উইলিয়ামস ৫৫*; জিয়া ১/২৫, মাহুমুদুল্লাহ ১/২৯, রবিউল ১/৪৫)