হেরেও শীর্ষে বাংলাদেশ, জিতেও বাদ পাকিস্তান

প্রাণপণ লড়াইয়েও যুব এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে হারাতে পারল না বাংলাদেশ। তবে ১ উইকেটের হারের পরও গ্রুপ সেরা সাইফ হাসানের দল। রান রেটে পিছিয়ে থাকায় জিতেও বাদ পড়েছে পাকিস্তান। সিঙ্গাপুরকে উড়িয়ে দেওয়া আফগানিস্তান খেলবে শেষ চারে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2016, 12:50 PM
Updated : 18 Dec 2016, 02:17 PM

‘বি’ গ্রুপে দুটি করে জয় পাওয়া বাংলাদেশ (+১.৫৮৪), আফগানিস্তান (+১.৪২৫) ও পাকিস্তানের (+১.৩৬৮) পয়েন্ট সমান- ৯ করে। তিন দলই বোনাস পয়েন্ট নিয়ে হারিয়েছে সিঙ্গাপুরকে।

সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশ খেলবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ফাইনালে যাওয়ার আরেক লড়াইয়ে আফগানিস্তানের প্রতিপক্ষ তিন ম্যাচেই বোনাস পয়েন্ট নিয়ে জেতা ভারত।

আফগানিস্তানকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা বাংলাদেশ পরের ম্যাচে উড়িয়ে দেয় সিঙ্গাপুরকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি সাইফের দল। ১ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় যায় ২৩০ রানে। জবাবে ৫ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছায় পাকিস্তান।

লক্ষ্য তাড়ায় দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন মোহাম্মদ জাহিদ আলম (৫০)। রান আউট হওয়ার আগে ৩২ বলের ইনিংসতে ৮টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

ফিরতি ক্যাচ নিয়ে মহসিন খানকে ফেরান সাইফ। তবে আব্দুল্লাহ শফিক, নাসির নওয়াজ ও আলি আসিফের ব্যাটে কক্ষপথেই থাকে পাকিস্তান। এক সময়ে ৪ উইকেটে ২০১ রানে পৌঁছে যায় দলটি।

ওয়াকার আহমেদকে বোল্ড করে পাকিস্তানের ইনিংসের ধসের শুরু করেন শওকত হোসেন। দ্রুত আরও ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দলটি। ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। ভাঙতে পারেনি প্রতিপক্ষের শেষ উইকেট জুটি। অবিচ্ছিন্ন ১৭ রানের জুটিতে দলকে জেতান সাদ খান ও মোহাম্মদ হাসনাইন কিন্তু বাদ পড়া ঠেকাতে পারেননি।

এর আগে রোববার গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফিরে যাওয়ার আগে ৩০ বলে ৫ রান করে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।

মন্থর ব্যাটিংয়ে পিছিয়ে ছিলেন না অধিনায়ক সাইফও। ৩২ রান করতে ৬০ বল খেলেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। শুরুর মন্থর ব্যাটিং চাপে ফেলে বাংলাদেশকে। ২৯তম ওভারে ১০০ রানের মধ্যে চার উইকেট হারায় তারা।

সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়ার কৃতিত্ব আফিফ ও মোহাম্মদ রকিবের। পঞ্চম উইকেটে এই দুই জনে গড়েন ৭৭ রানের চমৎকার জুটি। রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ফিরেন আফিফ। ৯৪ বলে খেলা তার ৮০ বলের ইনিংসটি গড়া ৮টি চার ও দুটি ছক্কায়।

দলে সংগ্রহ দুইশ’ পার করার পর ফিরেন রকিব। ৫৩ বলে খেলা তার ৪২ রানের ইনিংসে তিনটি চার ও দুটি ছক্কা। শেষের দিকে আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে এক বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে সিঙ্গাপুরকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। ৭৩ রানে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দিয়ে রান রেট বাড়াতে ৪ ওভার ১ বলে জিতেছে দলটি। দিন শেষে কাজে লেগেছে তাদের পরিকল্পনা। 

‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করেছে ভারত। অন্য ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ১ উইকেটে হারিয়েছে নেপাল।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৯.৫ ওভারে ২৩০ (সাইফ ৩২, অঙ্কন ৫, আফিফ ৮০, হাবিবুর ৮, রাফসান ৪, রকিব ৪২, অনিক ১০, আমিনুল ১৪, সাখাওয়াত ৩, নাঈম ০*, মুকিদুল ২; আফ্রাদি ২/৫০, হাসনাইন ২/৫২, উমর ২/৩২, আসিফ ০/২৪, সাদ ১/১৯, মনসুর ০/৩৬, নাসির ২/১১)

পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৯.১ ওভারে ২৩৩/৯ (জাহিদ ৫০, মহসিন ২৯, শফিক ৩০, নাসির ৪৫, আসিফ ৩৩, ওয়াকার ৭, আফ্রাদি ০, সাদ ১৮*, উমর ১, মনসুর ৪, হাসনাইন ৪*; অনিক ০/২২, মুকিদুল ০/৪১, সাখাওয়াত ২/৪৩, নাঈম ০/৪১, আফিফ ২/৩৭, সাইফ ১/৪৬)

ফল: পাকিস্তান ১ উইকেটে জয়ী।