রাজ্জাকের ছাড়া পাওয়ার খবরের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে সদ্যোজাত সন্তানকে কোলে এবং অন্য দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সিংড়া উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে আসেন রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম।
স্বামীর ‘মুক্তির’ খবরে তার চোখমুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
“নবজাতককে ওর বাবার কোলে তুলে দেওয়ার অপেক্ষায় আছি। অন্য ছেলে-মেয়েরাও বাবাকে জড়িয়ে ধরার অপেক্ষায় আছে।”
বাবার ছাড়া পাওয়ার কথা শোনার পর থেকে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে ছেলে-মেয়েরা টেলিভিশনের সামনে বসে থাকে বলেও জানান তিনি।
রাজ্জাকের মা বুলবুলি বেগম বলেন, ছেলে বাড়ি এলেই সদ্যোজাত নাতির নাম রাখা হবে।তার আকিকা করা হবে।
এসব নিয়ে এরইমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ছেলেকে ফিরিয়ে আনায় সরকার ও বিজিবি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান রাজ্জাবের বাবা তোফাজ্জল হোসেন।
দায়ী বিজিপি সদস্যদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজ্জাকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও প্রতিবেশীরা দলে দলে তাদের বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তারাও আনন্দ ভাগাভাগি করছেন।
প্রতিবেশী আয়েন উদ্দিন বলেন, “রাজ্জাক গ্রামের সবার কাছে খুব প্রিয়।তাকে অপহরণের খবর শোনার পর থেকেই মনটা কেঁদে উঠত।”
গত ১৭ জুন কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীতে গোলাগুলির পর বিজিবির নায়েক রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায় মিয়নামারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিপির সদস্যরা।
নেওয়ার পরদিন ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। অপহৃত বিজিবি সদস্যকে দ্রুত ফেরত পাঠাতে বলা হয় তাকে।
অন্যদিকে রাজ্জাককে ফেরাতে বিজিবির পক্ষ থেকে কয়েক দফা পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হলেও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাড়া না পাওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে বিষয়টি ঝুলে থাকে।
এরইমধ্যে নায়েক রাজ্জাকের দুটো ছবি প্রকাশ করা হয়, যাতে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাতকড়া হাতে দেখা যায়। এ অবস্থায় রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম গত রোববার সকালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।