বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ নুরুল হুদার আদালতের পুনঃজেরার সময় মামলার বাদী আবু সুফিয়ান এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার মামলার বাদী আবু সুফিয়ান এবং অন্য চার সাক্ষী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন, অভিযোগপত্র দাখিলকারী রবিউল হক, পুলিশ সদস্য আবদুল মজিদ ও আতিকুর রহমানকে পুনঃজেরা করা হয়।
এসময় অদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার আসামি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয় আ জ ম নাছির ও ফেনী সদরের সাংসদ আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম হাজারীসহ অন্য আসামিরা।
নাছিরের আইনজীবী চন্দন বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতে জেরার জবাবে বাদী আবু সুফিয়ান বলেন, সেসময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতাসীনদের চাপে তিনি মামলাটি করেছেন। এই মামলার এজাহার তিনি দেখেননি। আসামিদেরও তিনি ঘটনাস্থলে দেখেননি।”
এদিন পাঁচ জনের পুনঃজেরা শেষ হয়েছে জানিয়ে চন্দন বলেন, অন্য সাক্ষী পুলিশ সদস্যরা বলেছেন- মামলায় ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে লালদীঘির পাড়ের পেট্রোল পাম্প এলাকায়। তারা দায়িত্বরত ছিলেন ডিবির পাহাড়ে। অতদূর থেকে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে তারা আসামিদের কাউকে দেখতে পাননি।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার সাক্ষীদের পুনঃজেরা শেষে আগামী ৮ জুন পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এর আগে গত ৪ মে নির্ধারিত দিনে মামলার বাদী ও আসামি আদালতে হাজির ছিলেন না। এর ছয়দিন আগে চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচিত হন আ জ ম নাছির উদ্দিন।
গত ৬ এপ্রিল এ মামলায় আদালতে হাজিরা দেন আ জ ম নাছির। ওই দিন মামলার বাদী সুফিয়ান সিদ্দিকীকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। ওইদিন তার জেরা অসমাপ্ত ছিল।
১ এপ্রিল আদালতে হাজির হয়ে এ মামলায় জামিন নেন আ জ ম নাছির উদ্দিন। ১৯৯৩ সালে করা হত্যা চেষ্টা মামলাটিতে ফেনী সদরের সাংসদ আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম হাজারীও আসামি।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালদীঘির মাঠে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় সে সময়ের নগর ছাত্রলীগ নেতা সুফিয়ান সিদ্দিকীর ওপর অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করা হয়।
এ ঘটনায় সুফিয়ান সিদ্দিকী বাদী হয়ে নাছিরসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। ওই বছরের ৭ মার্চ সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মামলার ১২ সাক্ষীর মধ্যে আট জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাক্ষীদের অধিকতর জেরার আবেদন করে আসামিপক্ষ।
ওই আবেদন নাকচ হলে এক আসামি উচ্চ আদালতে ১৯৯৪ সালে রিভিশন মামলা করেন। মামলা স্থগিত চেয়েও উচ্চ আদালতে আবেদন করেন এক আসামি। সেই থেকে মামলাটি স্থগিত ছিল।
স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর গত বছর মার্চ মাসে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিভিশন মামলায় আদেশ দেন। এতে আগের আট সাক্ষীকে আবার জেরা ও ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি শেষ করতে বলা হয়।
ওই আদেশটি এক বছর পর গত মাসে চট্টগ্রাম আদালতে এসে পৌঁছায়। এরপর আদালত গত ৬ এপ্রিল শুনানির দিন ঠিক করেছিলেন।